ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ৭৪ হাজার কোটি টাকা
খেলাপি ঋণের লাগাম কোনোভাবেই টানতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি বছরের জুন মাস শেষে এ খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ। খেলাপি ঋণের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তৈরি করা জুন’১৭ প্রান্তিকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ঋণ বিতরণে অদক্ষতা, অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দুর্নীতি কাজ করছে। অন্যদিকে যাচাই-বাছাই না করেই দেয়া হচ্ছে ঋণ। এছাড়াও বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত নিয়মিত ঋণগুলো আবারও খেলাপি হয়ে পড়ছে। ফলে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। তাই এ বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন না হলে আগামীতে অনেক ব্যাংকিং খাত সংকটের মধ্যে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের জুন শেষে ব্যাংক খাতে বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৭৪ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা, যা ডিসেম্বর’১৬ শেষে ছিল ৬২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। অর্থাৎ ছয় মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা।
আর এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ১০ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের জুন প্রান্তিক শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৬৩ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা।
প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুন’১৭ শেষে রাষ্ট্রীয় খাতের সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৪ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা। বিদেশি ৯ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দুই হাজার ৩২১ কোটি টাকা এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ঋণ পাঁচ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অনিয়ম দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনায় ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। বিশেষ করে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ। তাদের যেন কোনো জবাবদিহিতা নেই। তাই এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো বাছবিচার না করেই ঋণ দিয়ে যাচ্ছে। এ নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এছাড়া নতুন ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। একই সঙ্গে পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপকদের জবাবদিহিতরি আওতায় আনতে হবে।
এসআই/বিএ