ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

ফার্স্ট ফাইন্যান্সের এমডিসহ তিনজনকে শোকজ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১০:২০ পিএম, ১৩ জুলাই ২০১৭

কারসাজি করে ডিভিডেন্ড দেয়ার অভিযোগে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ফাইন্যান্সের এমডি, সিএফও ও কোম্পানি সেক্রেটারিকে শোকজ করেছে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কর্মকর্তারা হলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মুহসীন মিয়া, কোম্পানি সেক্রেটারি সারোয়ার সফিক, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ওয়াহিদ মুরাদ।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ঋণের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রভিশন না রেখে নীতি বহির্ভূতভাবে ২০১৬ সালের জন্য ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে ফার্স্ট ফাইন্যান্স। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির এমডি, সিএফও ও কোম্পানি সেক্রেটারির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কেন নেয়া হবে না সে মর্মে গত ১৪ জুন নোটিশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরে সাতদিনের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছিল। তবে ঈদের ছুটির কারণে নির্দিষ্ট সময়ে জবাব না দিয়ে বৃহস্পতিবার চিঠির জবাব দেয়।

ওই নোটিশে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা ও আইন বহির্ভূত এ ধরনের কাজ অনৈতিক ও অপেশাদারী মনোভাবের পরিচায়ক। এ ধরনের বিধিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে আমানতকারী ও শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। যার দায় আপনারা কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না।

জানা গেছে, খেলাপিঋণের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী যে পরিমাণ প্রভিশন রাখতে হয় তা রাখেনি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের ফার্স্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি। পাশাপাশি আয়করের বিপরীতেও প্রভিশন রাখেনি কোম্পানিটি। এ প্রভিশন রাখলে যেখানে কোম্পানিটি লোকসান করত সেখানে এখন হয়েছে মুনাফা। এ মুনাফার বিপরীতে লভ্যাংশও ঘোষণা করেছে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ। এদিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকা এ কোম্পানিটি লভ্যাংশ ঘোষণা করায় কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।

প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মুহসীন মিয়া বলেন, ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানে কিছু সমস্যা ছিল। সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। কেন প্রভিশন ছাড়াই লভ্যাংশ ঘোষণা করা হচ্ছে তা উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অনুমোদন চাওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক তার অনুমোদন দিয়েছে এবং সঙ্গে কিছু বিষয়ের কিছু কারণ জানতে চায়। সেই জবাবও বৃহস্পতিবার দেয়া হয়েছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক বিবেচনা করে দেখবে কী সিদ্ধান্ত নেবে।

তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত একটি প্রতিষ্ঠান ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। ব্যবসার জন্য আর্থিক ভিত্তি শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন। ‘জেড’ ক্যাটাগরি থেকে বেরিয়ে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে আসতে ডিভিডেন্ট ঘোষণা করা হয়। প্রতিষ্ঠানটিকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে এ নীতিগত সহায়তা প্রয়োজন।

কোম্পানিটির নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান জি কিবরিয়া অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস তাদের মতামতে বলেছে, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বরে শেষ হওয়া আর্থিক বছরে কোম্পানিটি বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রভিশন রাখেনি। ঋণের বিপরীতে কোম্পানিটিকে ৬ কোটি ৭০ লাখ ৮৭ হাজার ৮৬৪ টাকা প্রভিশন রাখতে হত। কিন্তু তারা তা রাখেনি। পাশাপাশি কোম্পানিটি ২ কোটি ১৯ লাখ ৬১ হাজার ৯২ টাকার ইনকাম ট্যাক্স প্রভিশনও রাখেনি। যদি এ প্রভিশন রাখা হত তাহলে কোম্পানিটির মুনাফা ও শেয়ার প্রতি আয় মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হত।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, ফার্স্ট ফাইন্যান্স নিম্নমানের ‘জেড’ শ্রেণির কোম্পানি। কোম্পানিটি গত এপ্রিলে ৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এরপর থেকে এই শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে। এজিএমে ৫ শতাংশ লভ্যাংশ অনুমোদন পেলে কোম্পানিটি ‘বি’ শ্রেণিতে উন্নীত হত।

গত ১৫ জুন বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) হওয়ার কথা থাকলেও এক শেয়ারহোল্ডারের রিটের কারণে তা স্থগিত করেন আদালত। অনিয়মের মাধ্যমে মুনাফা ঘোষণা করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি ওই রিট আবেদন করেন।

এসআই/বিএ