রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে ব্যাংকিং খাতে দুরবস্থা
ব্যাংকিং খাতের দুরবস্থা তথা লুটপাটের পেছনে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবকে দায়ী করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
সংস্থাটি বলছে, ব্যাংকিং খাতের ভেতরে সুশাসন না থাকা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যথাযথ দেখভাল না করা ও অর্থ বিভাগের তদারকির ঘাটতি রয়েছে- এটা ঠিক। কিন্তু এগুলোর বাইরে সবচেয়ে বড় কথা হলো রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। রাজনৈতিক সিগন্যাল না থাকলে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতারও প্রয়োগ করা যায় না।
সোমবার ‘জাতীয় বাজেট ২০১৭-১৮ : অনুমোদন-পরবর্তী পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলে সিপিডি।
রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সিপিডি। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ব্যাংকিং খাতের এ অবস্থার মূল কারণ হলো রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব। এটা ব্যক্তি খাতের বিষয় নয়, এটা একটি গভীর বিষয়। রাজনৈতিক অর্থনীতি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, যদি রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকত তবে মনিটরিংয়ের জন্য যে তিন-চারটা প্রতিষ্ঠান আছে, তারা তাদের কাছে থাকা ক্ষমতার পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারত। সিকিউরিটি এক্সেস কমিশনও ব্যবস্থা নিতে পারত। কিন্তু ব্যাংকিং খাতে যে সংস্কার হচ্ছে না, এর মূল প্রতিবন্ধকতা ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক না, প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতার ব্যাপার না, এটার ব্যাপারে রাজনৈতিক সদিচ্ছা নেই। যদি সদিচ্ছা থাকত, তবে এ ধরনের ঘটনা ঘটার কোনো সুযোগ ছিল না। রাজনৈতিক একটা সিগন্যাল না থাকলে কোনো ব্যবস্থাই নেয়া যায় না।
তিনি বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্নভাবে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে সেটা ভালো। কিন্তু এটা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ সব ধরনের ব্যাংকের ক্ষেত্রে সুষমভাবে নেয়া উচিত। নির্বাচনের আগে যদি এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যেত তাহলে জনগণের উপকার হতো, জনগণ খুশি হতো।
দেবপ্রিয় এর মতে, ব্যাংকিং খাতে আনুপাতিক দায়িত্ব নির্দিষ্ট করতে হবে। সাময়িক সময়ের জন্য হলেও একটি ব্যাংকিং কমিশন গঠন করতে হবে। কমিশনের সুপারিশ পরবর্তীতে বাস্তবায়ন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন পরিচালক আনিসাতুল ফাতেমা ইউসুফ, অতিরিক্ত পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান।
এমএ/এআরএস/এমএস