ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

পোশাক খাতে বিদেশি বিনিয়োগ চান না উদ্যোক্তারা

প্রকাশিত: ০৩:০৪ পিএম, ০৪ জুলাই ২০১৭

বিদেশি উদ্যোক্তাদের তৈরি পোশাক খাতে বিনিয়োগ করতে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে সরকারি নির্দেশনাও দিতে চায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য এ সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

তবে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ এ খাতে বিদেশি বিনিয়োগ চায় না। তারা বলছে ইপিজেড এলাকার বাইরে পোশাক খাতে বিশেষ করে পোশাক সেলাই তথা তৈরির (বানানো) কাজে বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করা হলে পোশাক খাতে বিরুপ প্রভাব পড়বে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বিজিএমইএ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

তৈরি পোশাক খাতে বিদেশিদের বিনিয়োগের সুযোগ দিতে বেশ কিছুদিন ধরে কয়েক দফা বৈঠক করেছে সরকারের এ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি। গত ৫ নভেম্বর কমিটির সর্বশেষ বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র সঙ্গে আলোচনা সম্পন্ন করতে বলা হয়। পাশাপাশি ইপিবি কর্তৃক ইউডি (ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশন) সুবিধা দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পোশাক খাতে ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশন (ইউডি) হচ্ছে এমন একটি সুবিধা যা কেবল বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র সদস্য হলে পাওয়া যায়। ইউডি সার্টিফিকেট নিয়ে সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো শুল্কমুক্ত সুবিধায় পোশাকশিল্পের কাঁচামাল আমদানি করতে পারে। তবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো যেহেতু বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সদস্য নয়, সে কারণে তারা ইউডি সার্টিফিকেট নিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় কাঁচামাল আমদানি করতে পারছে না।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, এ বিষয়টি নিয়ে তারা তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সঙ্গে আলোচনা করেছে। সংগঠন দুটি পোশাক শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ইপিবি কর্তৃক ইউডি (ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশন) ইস্যু করার বিরোধী। তাদের বক্তব্য হচ্ছে পোশাক শিল্পকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে এসেছে দেশীয় উদ্যোক্তারাই এবং দেশীয় উদ্যোক্তারাই এ খাতে বিনিয়োগের জন্য স্বয়ংসম্পুর্ণ। বিজিএমইএ আরও মনে করে ইপিজেড এলাকার বাইরে পোশাক খাতে বিশেষ করে কাটিং ও মেকিংয়ের কাজে বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করা হলে পোশাক খাতে বিরুপ প্রভাব পড়বে।

তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মনে করে তৈরি পোশাক শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য ইউডি রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে প্রদান করা দরকার। এ বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা দেয়ার অনুমোদন চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে বিজিএমইএ’র সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ইপিজেডের বাইরে কোন বিদেশি উদ্যোক্তা তৈরি পোশাক কারখানা করতেই পারে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের পোশাক খাতে মূল কাজে বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োগ নেই। এক্ষেত্রে দেশীয় উদ্যোক্তারাই যথেষ্ট। তবে পোশাক শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজে তারা বিনিয়োগ করতেই পারে।

তিনি আরও বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, বিদেশিরা এদেশে এসে ছোট ছোট ফ্যাক্টরি করে ব্যবসা শুরু করে। তারপর তারা ব্যবসায় ভালো না করলে শ্রমিকদের কোনো বেতন না দিয়েই চলে যায়। তখন সেগুলো আমাদেরকেই সামাল দিতে হয়। ইপিজেডে যেসব বিদেশিরা ব্যবসা করে তাদের অনেক যাচাই-বাছাই করে জমি দেয় সরকার। বাইরে তারা ফ্যাক্টরি করলে সেটার খোঁজখবরও তেমন রাখা হয়না। এজন্য আমরা ইপিজেডের বাইরে বিদেশিদের কারখানা করতে দিতে রাজি নই।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, পোশাক খাতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ সুবিধা দিতে চায় সরকার। এরই মধ্যে যেসব বিদেশি প্রতিষ্ঠান এ খাতে বিনিয়োগ করেছে শর্তসাপেক্ষে তাদের সুবিধা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে চায়। বিশেষ করে বাংলাদেশে ব্যবসা করেছেন এমন জাপানি ব্যবসায়ীদের ৮০ শতাংশই এ দেশে তাদের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড আরও সম্প্রসারণ করতে চান। আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যেই তারা এই কাজটি করতে আগ্রহী।

জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোর মতে, বাংলাদেশ ও ভারতে পরিচালন মুনাফা বৃদ্ধির খুবই সম্ভাবনা দেখছে তারা। জরিপ অনুসারে, ২০১৩ সালে এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৫ দশমিক ৯ শতাংশ আগের বছরের চেয়ে বাংলাদেশে তাদের পরিচালন মুনাফা বাড়বে বলে পূর্বাভাস করেছিল। তবে চলতি বছর মুনাফা বৃদ্ধির পূর্বাভাস করেছে ৬৭ দশমিক ৬ শতাংশ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। এই পূর্বাভাস ভারতের চেয়েও বেশি। ভারতে ব্যবসা পরিচালনাকারী ৩৩৬টি জাপানি প্রতিষ্ঠানের ৬৩ দশমিক ১ শতাংশ পূর্বাভাস করেছে তাদের পরিচালন মুনাফা বাড়বে।

এমইউএইচ/ওআর/আরআইপি