ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

আবগারি শুল্ক কমায় ব্যাংকার ও আমানতকারীদের স্বস্তি

প্রকাশিত: ১০:৫২ এএম, ২৯ জুন ২০১৭

গ্রাহকদের ব্যাংকে সঞ্চিত অর্থের ওপর আবগারি শুল্ক (এক্সাইজ ডিউটি) কমানোর কারণে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ব্যাংকার, আমানতকারী ও ব্যবসায়ীরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের এ সিদ্ধান্তে আমানতকারীদের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া আতঙ্ক কেটে যাবে। ফলে ব্যাংকমুখী হবে সাধারণ মানুষ। এছাড়া বর্ধিত শুল্কের কারণে অর্থ ‘পাচারের’ যে শঙ্কা ছিল তাও দূর হবে।

এ বিষয়ে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী আনিস এ খান জাগো নিউজকে বলেন, মানুষ অনেক কষ্টে অর্জিত টাকা ভবিষ্যতের জন্য ব্যাংকে জমা করে। আর এ টাকার উপর কোনো ধরনের শুল্ক কাটা উচিত নয়। বিশ্বের অন্য কোনো দেশে এ ধরনের শুল্ক নেয় কি না জানা নেই। এ ধরনের শুল্ক যে পরিমাণই হোক না কেন তা সঞ্চয় থেকে কেটে নিলে আমানতকারীরা নিরুৎসাহিত হয়। তাই এ ধরনের শুল্ক না রাখাই ভালো। এরপরও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্কের বর্ধিত হার কমানোকে স্বাগত জানাই। এটি ব্যাংকিং খাতের জন্য ইতিবাচক সিদ্ধান্ত বলে মনে করি।

এর আগে গত ১ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মহিত। প্রস্তাবে ব্যাংক আমানতে আবগারি শুল্কহার বাড়ানো হয়। এ প্রস্তাবে অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ ও সংসদ সদস্যদের তীব্র সমালোচার মুখে পড়েন অর্থমন্ত্রী। বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে সরকারও। শেষ পর্যন্ত এ প্রস্তাব থেকে সরে আসার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে নতুন হার নির্ধারণের সুপারিশ করেন প্রধানমন্ত্রী। আর সেই সুপারিশ আমলে নিয়ে কিছু সংশোধন করে বুধবার সংসদে অর্থবিল পাস হয়।

bdg

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে পাস হয় ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট। ফলে এখন থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতের ওপর কোনো ধরনের আবগারি শুল্ক দিতে হবে না। আর ১ লাখ ১ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতে ১৫০ টাকা এবং ৫ লাখ ১ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতে ৫০০ টাকা আবগারি শুল্ক কাটা হবে। এছাড়া ১ কোটি টাকার ওপর অন্য স্তরের আবগারি শুল্ক হার অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুসারে রাখা হয়। অর্থাৎ ১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত স্থিতির ক্ষেত্রে ১২ হাজার এবং ৫ কোটি টাকার বেশি স্থিতিতে ২৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক আদায় করা হবে।

এ বিষয়ে মেঘনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল আমীন জাগো নিউজকে বলেন, একদিকে ব্যাংকের ডিপোজিট রেট (আমানতের সুদহার) অন্যদিকে আবগারি শুল্ক বর্ধিতহার আমানতকারীদের আতঙ্কিত করেছে। তারা মনস্তাত্বিক চাপে ছিল। দেশের মানুষকে ব্যাংকিংমুখী করার যে টার্গেট তা বাধাগ্রস্ত হত। সরকার বাজেটে আবগারি শুল্কের বর্ধিতহার কমিয়েছে। তা আগের তুলনায় আরও সহজ করেছে। এজন্য রাজস্ব আহরণ কম হলেও সরকার জনকল্যাণের জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটাকে সাধুবাদ জানায়। এতে ডিপোজিট রেট কমার কারণে ছোট অঙ্কের আমানতকারীদের যে ক্ষতি হচ্ছে তা কিছুটা হলেও পুষিয়ে যাবে।

এদিকে আবগারি শুল্ক নিয়ে মুদি ব্যবসায়ী সোহান বলেন, অনেক সময় ক্যাশ টাকা ব্যাংকে লেনদেন করতে হয়। এখান থেকে যদি সরকার টাকা কেটে নেয় তাহলে কোথায় টাকা রাখব। তার মানে হচ্ছে নগদ টাকা সঙ্গে রাখব। চোর ও ছিনতাইকারীদের টাকা নিতে সহজ হবে। কোন পাগলে সরকারকে এ বুদ্ধি দিয়েছে জানি না। যাই হোক শুনেছি আবগারি শুল্ক কমিয়েছে সরকার। এটা ভালো হয়েছে। এতে উপকার হবে।

অর্থমন্ত্রীর ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে আবগারি শুল্ক বিষয়ে যা ছিল তা হলো বছরের যেকোনো সময় ব্যাংক হিসাবে এক লাখ টাকার বেশি স্থিতি থাকলে আবগারি শুল্ক বিদ্যমান ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৮০০ টাকা কাটা হবে। এছাড়া ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত স্থিতির ক্ষেত্রে ১ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ২ হাজার ৫০০ টাকা, ১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত স্থিতির ক্ষেত্রে ৭ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ১২ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার বেশি স্থিতিতে ১৫ হাজার টাকার বদলে ২৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক আদায়ের প্রস্তাব করেন মুহিত।

এসআই/এএইচ/জেআইএম

আরও পড়ুন