বৃষ্টির পানিতে সবজিতে আগুন
কয়েকদিনের ঝড়-বৃষ্টিকে অজুহাত করে সবজির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে সব সবজির দামই বেড়েছে। বৃষ্টির অজুহাতে আজ শুক্রবার সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। মাছ-মাংসের দামও বেশ চড়া। ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগির দামও বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। তবে রসুনের দাম কিছুটা কমেছে। রাজধানীর মহাখালি ও মিরপুর শেওড়াপাড়া কাঁচাবাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক নয় তাই অধিকাংশ সবজি ও মাছ মাংসের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ সুযোগ পেলেই বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দেন। বৃষ্টিটা কেবলমাত্র অজুহাত।
শুক্রবার শেওড়াপাড়া কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুণ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়; যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকা; গত সপ্তাহে যা ছিল ৬০ টাকা। শশা ও খিরা বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়; যা গত সপ্তাহে ছিল ২০-২৪ টাকা। লেবু প্রতিহালি ৩০ টাকা; যা গাত সপ্তাহে ছিল ২৪ টাকা।
শেওড়াপাড়া কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মইনুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির কারণে গাড়ি কম আসে ফলে সবজি কম আসছে তাই এ সপ্তাহে বেশিরভাগ সবজির দাম একটু বেশি।
বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী রোবহান উদ্দিন বলেন, সব ধরনের সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি। সিটি কর্পোরেশন গরু ও খাসির দাম নির্ধারণ করে দিলেও সে দামে মাংস পাওয়া যাচ্ছে না। নতুন করে এ সপ্তাহে মুরগির দাম বেড়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিবছরই ব্যবসায়ীরা রমজানের শুরুতে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ায় পরে আর তা কমে না। সরকার তেমন কোনো কার্যকরি পদক্ষেপও গ্রহণ করে না। এর ফলে সমস্যায় পরতে হয় আমাদের মত সীমিত আয়ের মানুষদের।
শুক্রবার খুচরা বাজারে প্রতিকেজি সাদা আলু বিক্রি হচ্ছে ১৭ থেকে ২৩ টাকা; যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬-২২ টাকা। বাধাকপি প্রতিপিচ ৫০ টাকা; যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ টাকা, করলা প্রতিকেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা; য গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা, টমেটো বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা; যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৫-৫০ টাকা।
এছাড়া শিম ৬০-৭০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, ধুন্দল, ঝিঙা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার পিচ ১৫-২০ টাকা, বরবটি ৪০-৫০ টাকা, ঢেঁড়স, কচুরলতি ৪০ টাকা এবং কাঁচা কলা প্রতিহালি ২৪-৩২ টাকা।
প্রতি আঁটি লাল শাক, পালং শাক গত সপ্তাহের থেকে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, পুঁই ও ডাটা শাক ২০-৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
দেশি পেঁয়াজ প্রকারভেদে কেজি প্রতি ৩০-৩২ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ২৫-২৮ টাকা বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। শুক্রবার প্রতিকেজি ১০ থেকে ২০ টাকা কমে দেশি রসুন ১৩০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। গত সপ্তাহে যা হঠাৎ করে বেড়ে ১৪০ টাকা থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
সিটি কর্পোরেশন প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৪৭৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও শুক্রবার তা বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়। একইভাবে খাসির মাংসের দাম ৭২৫ টাকা নির্ধরিত থাকলেও তা বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে প্রতি কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগির বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়। এছাড়া এক কেজি ওজনের প্রতি পিস কক মুরগি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা ও দেশি মুরগি ৩৫০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মহাখালিতে মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব ধরনের মাছের দাম প্রতি কেজি বেড়েছে ৫ থেকে ২০ টাকা। শুক্রবার প্রতি কেজি রুই ২৬৫-৩৬৫ টাকা, কাতলা ৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩৫-২০০, সিলভার কার্প ১৮০-২০০ টাকা, আইড় ৪৫০-৬০০ টাকা, বাইলা মাছ প্রকার ভেদে ৩০০-৪৫০ টাকা, বাইন মাছ ৪০০-৫০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৪৫০-৮০০ টাকা, পুঁটি ২০০-৩৫০ টাকা, পোয়া ৪০০-৪৫০ টাকা, মলা ৩২০-৩০০ টাকা, পাবদা ৫০০-৬০০ টাকা, বোয়াল ৪৫০-৫০০ টাকা, শিং ৪০০-৭০০, দেশি মাগুর ৪০০-৭০০ টাকা, শোল মাছ ৩৫০-৫০০ টাকা, পাঙ্গাস ১৪০-১৬০ টাকা, চাষের কৈ ২০০-২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায়।
ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফার্মের লাল ডিম প্রতি হালি ২৮-৩০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ৪৪ টাকা ও হাঁসের ডিম ৪০-৪৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এমইউএইচ/এআরএস/এমএস