হাইটেকের চেয়ে শ্রমঘন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসার জরুরি : আমু
বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে হাইটেক শিল্পের চেয়ে শ্রমঘন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) প্রসার জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) টুল ইনস্টিটিউট ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ম্যানুফ্যাকচারিং হাল্কা প্রকৌশল শিল্প প্রসারের মাধ্যমে দেশে ব্যাপকহারে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব। এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাল্কা প্রকৌশল শিল্পের জন্য ঢাকার কেরানীগঞ্জে একটি পরিকল্পিত শিল্পনগরী গড়ে তোলা হচ্ছে। ক্ষতিকর কেমিক্যাল, প্লাস্টিক ও মুদ্রণ শিল্পের জন্যও পৃথক শিল্পনগরী গড়ে তোলার কাজ চলছে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, শিল্পায়নের লক্ষ্য অর্জনে দেশে বিপুল পরিমাণে কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবল প্রয়োজন। শিল্পোন্নত দেশগুলোর শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী যেখানে কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে এর পরিমাণ এখনও মাত্র ১০ শতাংশ।
বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি লোক বিদেশে চাকরি করলেও দক্ষতার অভাবে তারা ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দেশব্যাপী যে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে, সেগুলো সচল রাখতে ব্যাপকহারে কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনবল তৈরির ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
আমির হোসেন আমু বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ‘ঘরে ঘরে কর্মসংস্থান সৃষ্টি’র ঘোষণা বাস্তবায়নে শিল্প মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। বিটাকের মাধ্যমে বেকার যুবক ও যুব মহিলাদের গুরুত্ব দিয়ে হাতে-কলমে কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় এপ্রিল ২০১৭ পর্যন্ত ১১ হাজার ২৩২ জন পুরুষ এবং ৮ হাজার ১০০ জন মহিলাসহ সর্বমোট ১৯ হাজার ৩৩২ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ২৭২ জন পুরুষ এবং ৩ হাজার ৩৩৮ জন মহিলাসহ সর্বমোট ৬ হাজার ৬১০ জন প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হবার সঙ্গে সঙ্গেই চাকরি পেয়েছেন। টুল ইনস্টিটিউট চালু হলে দেশেই বিশ্বমানের হাল্কা প্রকৌশল পণ্য ও খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরি সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বিটাকের মহাপরিচালক ড. দিলীপ কুমার শর্মা এনডিসি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুষেণ চন্দ্র দাস, প্রকল্প পরিচালক ড. সৈয়দ মো. ইহসানুল করিম।
উল্লেখ্য, বিটাকের টুল ইনস্টিটিউট স্থাপনে ব্যয় হবে ৭৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি সমাপ্ত হবে। এ প্রকল্পের আওতায় ৮তলা ভবন নির্মাণ, কম্পিউটার নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোল (সিএনসি) মেশিন স্থাপন এবং এসএমই খাতের জন্য টেস্টিং সুবিধাসহ কমন ফ্যাসিলিটি গড়ে তোলা হবে।
এসআই/এমএমজেড/এমএআর/পিআর