আন্দোলন করেন কিছু হবে না, ব্যবসায়ীদের অর্থমন্ত্রী
ব্যবসায়ী নেতাদের আন্দোলনের হুমকির জবাবে ক্ষুব্ধ অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘আন্দোলন করেন কিছু হবে না।’ এ সময় নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন নিয়ে ব্যবসায়ীদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি।
রোববার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে ব্যবসায়ীদের প্রাক-বাজেট আলোচনার একপর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে।
এনবিআরের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সভাপতি আবু মোতালেব বলেন, ‘ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য আলাদাভাবে খেয়াল রাখতে হবে। নতুন আইন বাস্তবায়নের দিকে যাচ্ছে সরকার। অথচ কোনো প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘দাতা সংস্থা আইএমএফের প্রকল্প রয়েছে প্রশিক্ষণের জন্য। কিন্তু কাউকে কোনো প্রশিক্ষণ না দিয়ে কি করে এ আইন বাস্তবায়ন হবে। এমন আইন বাস্তবায়নে যাবেন না, যেটা হলে ব্যবসায়ীরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়। এর আগে ভ্যাট আইন নিয়ে ছাত্ররা আন্দোলনে নেমেছিল। আমরা নামতে চাই না। এতে দেশের ক্ষতি, আমাদেরও ক্ষতি।’
এ সময় তাকে থামানোর চেষ্টা করেন নজিবুর রহমান। কিন্তু বক্তব্য চালিয়ে যান আবু মোতালেব। এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষেপে যান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘অনেক বলেছেন। কিছু করতে পারবেন না, আন্দোলন করেন কিছু হবে না।’
মুহিত বলেন, ‘দেশে আট লাখ আয়কর দেয়ার মতো ব্যবসায়ী রয়েছেন। ভ্যাট দেয় মাত্র ৩২ হাজার। এই ৩২ হাজারের মধ্যে আপনারা যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আছেন, তারা কয়জন আছেন।’
এ সময় ব্যবসায়ীরা হৈ-চৈ শুরু করেন। পেছন থেকে অনেকে বলতে থাকেন, ‘আমাদের ডেকেছেন কেন। বের করে দেন। ব্যবসায়ীদের সমস্যা দেখবেন না, তা হতে পারে না।’
এরপর এফবিসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট শফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন ব্যবসায়ীদের থামানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি বলতে থাকেন, ‘হাসিনার সরকার ব্যবসাবান্ধব সরকার। ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয় এমন কিছু তিনি করবেন না।’
পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে সমাপনী বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আবু তালেবের বক্তব্য আমার পছন্দ হয়নি। তিনি থ্রেট দিয়েছেন। এটা মোটেও ঠিক হয়নি। তিনি যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেবেন এমন একটা ভাব। এটা ঠিক না। আমরা এখানে বসছি আলোচনা করতে। তাহলে এ ধরনের কথা কেন? ভবিষ্যতে এটি খেয়াল রাখবেন।’
‘এই টাইপের কথা যেন না হয়, আই অ্যাম সরি টু সে’-বলেন ক্ষুব্ধ অর্থমন্ত্রী।
এর আগে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ লিখিতে বক্তব্যে ব্যক্তি আয়ের করসীমা সোয়া তিন লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন।
এমএ/এসআর/এমএস