ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

কোমল পানীয়তে সম্পূরক শুল্ক কমানোর দাবি

প্রকাশিত: ০৬:১৭ পিএম, ১০ এপ্রিল ২০১৭

স্থানীয় পর্যায়ে কোমল পানীয়র সম্পূরক শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বেভারেজ ম্যানুফ্যাচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটি বলছে, এক বোতল কোমল পানীয় উৎপাদনে বর্তমানে সর্বমোট ৪৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ কর দিতে হচ্ছে বাংলাদেশি বোভারেজ পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পানীয় উৎপাদনে ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ২৯ দশমিক ২ শতাংশ কর দিতে হয়।

এছাড়া পানীয় তৈরির কাঁচামালেও শুল্ককর প্রতিবছর বাড়ানো হচ্ছে। অতিরিক্ত এই করের বোঝার কারণে দেশীয় বাজারে পানীয়ের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বাজার কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে বিস্তার লাভ করছে না। পাশাপাশি বাংলাদেশি উৎপাদনকারীদের পানীয় রফতানিতে প্রতিযোগী সক্ষমতা গড়ে উঠছে না।

সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে বৃহৎ করদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচার ও বেভারেজ ম্যানুফ্যাচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব প্রস্তাবনা দেয়া হয়। এতে বেভারেজ ম্যানুফ্যাচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শেখ শামীম উদ্দীন, প্রাণ গ্রুপের চিফ অপারেটিং অফিসার আনিসুর রহমান বক্তৃতা করেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন আয়কর নীতির সদস্য পারভেজ ইকবাল, শুল্কনীতির সদস্য লুৎফর রহমান ও ভ্যাট নীতি সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এখাতের প্রতিষ্ঠানগুলো একধরনের অনিশ্চয়তা ও শঙ্কার মধ্যদিয়ে সময় পার করছে। বেভারেজ সেক্টরের বিকাশ ও এখাতে বিনিয়োগের ধারা অব্যাহক রাখতে এ শঙ্কা দূর করা জরুরি। দেশের অভ্যন্তরে করের চাপ বেশি থাকায় চলমান প্রতিষ্ঠানগুলো কাঙ্ক্ষিত হারে উৎপাদন করতে পারছে না। ফলে বিনিয়োগ দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে।

এ সময় বলা হয়, বেভারেজ সেক্টরের স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ২৫ শতাংশ আরোপিত রয়েছে। ফলে স্থানীয় পর্যায়ে করের হার (আপতন) পড়ে ৪৩.৭৫ শতাংশ। যা অনেক বেশি। এজন্য দেশে বেভারেজের উৎপাদন পর্যায়ে ব্যয় কমিয়ে আনা অপরিহার্যতা রয়েছে। কারণ শুল্কহার বাড়ানোর কারণে সাময়িকভাবে দেশের রাজস্ব বাড়লেও দীর্ঘ মেয়াদে শিল্প বিকাশ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নীতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

শেখ শামীম উদ্দীন বলেন, বেভারেজ সেক্টর দ্রুত বিকাশ লাভ করছে। এখন পূর্ণতা পেতে কিছু সময় দেয়া প্রয়োজন। এখাতে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। আরও চার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের জন্য পাইপ লাইনে আছে। কিন্ত করের ভার বেশি হওয়ার কারণে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন ক্ষমতা পুরোপরি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এজন্য নতুন কোনো বিনিয়োগও আসছে না।

তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে বেভারেজ পণ্য উৎপাদনের কর সবচেয়ে বেশি। অন্যদিকে ভোগের দিক থেকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে অবস্থান করছে। কর কমানো হলে পণ্যের দাম কমবে। এতে ভোগের পরিমাণ বাড়বে। মাথাপিছু ভোগ বাড়লে টার্নওভারও বাড়বে। ফলে রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে। তাই কোমল পানীয়ের কর কাঠামো পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান তিনি।

২০১৪ সালের ২২ এপ্রিল মূল্য সংযোজন কর (মূসক) হার ১৫ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ করা হয়। যা এখনও বলবৎ রয়েছে। যা আগামী বাতিল করে পূর্বের ন্যয় ১৫ শতাংশ করা জরুরি বলে জানান তিনি।

প্রাণ বেভারেজের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, ১৩৪টির বেশি দেশে প্রাণের পণ্য রফতানি হয়। উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রাণের সবধরনের পণ্যই বাজার দখল করতে সক্ষম হয়েছে। শুধু বেভারেজ আইটেম ছাড়া। কারণ কোমল পানীয় উৎপাদনে ৪৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ কর দিতে হচ্ছে। আর ভারতে আরও কম কর দিতে হচ্ছে। তাই প্রাণ ভারতের আসাম ও ত্রিপুরায় বিনিয়োগ করছে। সেখানকার উৎপাদিত পণ্য ভারতে সরবরাহ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশে এখন রাজনৈতিক অস্থিরতা নেই। অন্যান্য অবস্থাও ভালো। কিন্তু বিনিয়োগের জন্য কর হার কমানো জরুরি। নইলে বিনিয়োগ বাড়বে না।

নজিবুর রহমান বলেন, আমরা আগামী বাজেট অধিকতর ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব করতে চাই। এজন্য সবপক্ষের সঙ্গে আলাপ আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আমরা সার্বিক বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে বিস্তারিত অবহিত করবো।

তিনি বলেন, আয়কর আইনের খসড়া তৈরি হচ্ছে। এটি সবাই সঙ্গে নিয়ে করা হচ্ছে। যেন সবার কাছে সারা নিয়েই রাজস্ব আহরণ বাড়ানো যায়।

এমএ/বিএ