সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহনির্মাণ ঋণ সুবিধা বাড়ছে
সরকারি চাকরিজীবী যারা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে রয়েছেন তারা ১০ লাখ টাকা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে যারা তারা সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ সুবিধা পাবেন। এ ঋণের সুদহার হবে ৫ শতাংশ। বর্তমানে ১০ শতাংশ সুদে এ ঋণের পরিমাণ এক লাখ ২০ হাজার টাকা নির্ধারিত। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ঋণের পরিমাণ ও সুদহার ঠিক করার জন্য অর্থ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি আলাপ আলোচনা করে যে প্রস্তাব দেবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে সরকার।
সূত্র জানায়, অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ আর এম নাজমুজ ছাকিবকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ কমিটি একটি বৈঠক করেছে। বৈঠকের কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, বর্তমান নির্ধারিত গৃহনির্মাণ ঋণ বাবদ ১ লাখ ২০ হাজার থেকে যৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে জেলা ও উপজেলাসহ মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মচারীদের ১০ লাখ টাকা করা হয়। এতে ওই পর্যায়ের একজন সরকারি কর্মচারীর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে পারে।
একইভাবে বিভাগীয় শহর এবং মহানগরীতে বসবাসকারী কর্মকর্তা/কর্মচারীদের গৃহনির্মাণ ঋণের বিষয়টি যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করাও এখন সময়ের দাবি। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্র বলছে, এটি বাস্তবায়িত হলে কেবল সরকারি কর্মচারীরাই উপকৃত হবে এমনটি নয় বরং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আবাসন ও আর্থিক খাতেও সুদূরপ্রসারী ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ ঋণে সুদহার হবে ৫ শতাংশ।
এ বিষয়ে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া জাগো নিউজকে বলেন, সরকারের এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানান তারা। তবে এর সঙ্গে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য অল্প সুদে গৃহঋণ দেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য একটি তহবিল গঠন করেছিল সরকার। কিন্তু পরবর্তীতে সেটা স্থগিত করা হয়েছে। ওই তহবিলটি পুনরায় চালুর আহ্বান জানান তিনি।
কার্যবিবরণীতে আরও বলা হয়, মূল বেতনের তিন ভাগের এক ভাগের বেশি কর্তন করা যৌক্তিক হবে না। তবে এখন যেহেতু ৫০ শতাংশ পেনশন গ্রহণের বাধ্যবাধকতা পুনঃপ্রবর্তন করা হয়েছে, সেহেতু গ্র্যাচুইটির একটি নির্দিষ্ট অংশকে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নিয়ে ঋণের সিলিং নির্ধারণ করা যেতে পারে। এছাড়া নবীন কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য গৃহনির্মাণ ঋণ সুবিধার আওতায় চাকরির শুরুতেই একটি বাসস্থানের সংস্থান করা সম্ভব হলে সরকারি চাকরিতে মেধাবীরা আকৃষ্ট হবেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, বিষয়টি চূড়ান্ত করতে মন্ত্রিসভার চাপ রয়েছে। তাই এ সংশ্লিষ্ট কমিটি দ্রুত আরও বৈঠক করে প্রথম বৈঠকের কার্যবিবরণীর আলোকেই গৃহঋণের বিষয়টি চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের এ সুযোগের আওতায় আনা যায় কিনা সে বিষয়টিও ভাবা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে সরকারি চাকরিজীবীদের সংখ্যা প্রায় ২১ লাখ। এর মধ্যে স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিতসহ এমপিওভুক্ত শিক্ষকের সংখ্যা সাত লাখ।
এমইউএইচ/ওআর/পিআর