জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স কমেছে ১৪ কোটি ডলার
চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে ১০০ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। যা আগের বছরের একই মাসে এ পরিমাণ ছিল ১১৫ কোটি ৬ লাখ ডলার। সে হিসেবে বছরের প্রথম মাসে রেমিট্যান্স কমেছে ১৪ কোটি ১১ লাখ ডলার বা ১২ দশমিক ২৭ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চলা রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা। এছাড়াও বেসরকারি পর্যায়ে জনশক্তি রফতানিতে ভাটা ও হুন্ডি বা অবৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানোর প্রবণতা বেড়ে যাওয়া রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে।
এদিকে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ইতিহাসে বছরের হিসেবে ২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো রেমিটেন্স প্রবাহ কমে। এরপর থেকেই রেমিট্যান্স নিম্নমুখী আছে। সদ্যসমাপ্ত বছরেও নিম্নগতি অব্যাহত ছিল। ২০১৬ সালে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৩৬১ কোটি মার্কিন ডলার। যা ২০১৫ সালে ছিল এক হাজার ৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার। সে হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স কমেছে ১৭০ কোটি ৬১ লাখ মার্কিন ডলার বা ১১ দশমিক ১৪ শতাংশ। টাকার অংকে যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে ১০০ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর আগের মাস ডিসেম্বরে পাঠিয়েছিল ৯৫ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। সেই এক মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৫ কোটি ৭ লাখ ডলার।
জানুয়ারিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে ২৮ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। বিশেষায়িত দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে এক কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৭০ কোটি ৩০ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এক কোটি ১৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
বরাবরের মতোই বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে। ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে ২১ কোটি ১৮ লাখ মার্কিন ডলার। এছাড়া অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ৫ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৩২ লাখ ডলার এবং জনতার মাধ্যমে ৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে আরও দেখা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তার আগের অর্থবছরের তুলনায় দুই দশমিক ৫১ শতাংশ কম প্রবাসী আয় আসে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে পুরো সময়ে রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার। যা আগের অর্থবছরে যা ছিল এক হাজার ৫৩১ কোটি ডলার।
এসআই/বিএ