ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে মূল চ্যালেঞ্জ অবকাঠামো
সরকার ঘোষিত ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নের মূল চ্যালেঞ্জ অবকাঠামোগত সমস্যা বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। বৃহস্পতিবার মতিঝিল ঢাকা চেম্বার অডিটোরিয়ামে মিট দ্যা প্রেসে এ কথা জানান ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান।
এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১১-১২ অর্থবছরে যেখানে মোট অবকাঠামো বিনিয়োগ ছিল ২ দশমিক ০৫ বিলিয়ন, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৩২ বিলিয়ন। অবকাঠামো খাতে বাংলাদেশের বিনিয়োগ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। এটা ভালো, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়।
গ্লোবাল কম্পিটিটিভনেস রিপোর্টে বলা হয়েছে, অবকাঠামো উন্নয়নে ১৩৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১১৪তম অবস্থানে, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে। যেখানে শ্রীলংকা ১০৩তম, ভিয়েতনাম ৭৩তম ও কম্বোডিয়া ৯৮তম।
বিশ্বব্যাংকের মতে, বাংলাদেশে ২০২০ সালের মধ্যে ৭৪ থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার অবকাঠামোগত খাতে বিনিয়োগ প্রয়োজন। আর ঢাকা চেম্বারের হিসেবে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩২০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রয়োজন। সেই হিসেবে প্রতিবছর ২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন, যা জিডিপির ৫ শতাংশ, বর্তমানে যা রয়েছে ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
এছাড়া মানসম্পন্ন উন্নয়নে ঢাকা বিকেন্দ্রীকরণের উপর নজর দিতে বলেন এ ব্যবসায়ী নেতা। তিনি বলেন, সঠিক পরিকল্পনার অভাবে এবং মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপের কারণে ঢাকা শহরে মানুষ স্বাভাবিক জীবন অতিবাহিত করতে পারছে না। তাই ঢাকাভিত্তিক প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণ জরুরি। ঢাকামুখী জনস্রোত বন্ধ করতে অন্য জেলা শহরেও সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।
ঢাকা চেম্বার মনে করে, ২০২১ সালে দেশের পোশাক খাতে রফতানি ৫০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার যে লক্ষ্যমাত্রা রযেছে, তা অর্জনে দেশের অবকাঠামো খাতে উন্নয়ন করতে হবে। এরমধ্যে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারমূলক খাতগুলো হলো, মহাসড়ক, টোল রোড ব্যবস্থা এবং এক্সপ্রেসওয়ে উন্নতকরণ, রেলপথে যোগাযোগ, নৌপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ঢাকা-চট্টগ্রাম অর্থনৈতিক করিডোর, ঢাকা শহর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন (এমআরটি এবং বিআরটি প্রকল্প), বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, বন্দর, সমুদ্রবন্দর ও গভীর সমুদ্রবন্দর উন্নয়ন, কয়লা জ্বালানি, এলএনজি টার্মিনাল, নতুন গ্যাস খনি খনন, এলপিজি ব্যবহার এবং অবকাঠামো খাতে বিদেশি বিনিয়োগ।
এদিকে দেশে প্রতিবছর ২৫ লাখ লোক কর্মবাজারে আসে উল্লেখ করে ঢাকা চেম্বার বলেন, তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এখন প্রধান কাজ। এজন্য বেসরকারি খাতে উৎপাদনমুখী বিনিয়োগের প্রতি জোর দিতে হবে। এক্ষেত্রে বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতে ঋণ প্রবাহ বাড়াতে হবে।
নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবারহের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পতা নেয়া উচিত বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার। একইসঙ্গে নীতি নির্ধারনী বিষয়ে সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়ী সংগঠনের বৈঠক করা জরুরি। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর দফতরে (পিএমও) একটি কমিটি গঠন বা আলাদা মন্ত্রণালয় করা যেতে পারে।
এসআই/ওআর/পিআর