বাণিজ্য মেলায় দেদারছে চলছে চাঁদাবাজি
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় দেদারছে চলছে চাঁদাবাজি। অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে হকার প্রবেশ করাচ্ছেন মেলার টিকিট ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। আর রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে স্টলে স্টলে চলছে চাঁদাবাজি। তবে সবকিছু জেনেও যেন নীরব ভূমিকা পালন করছে মেলার আয়োজক রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
মেলার অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন স্টল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, হকার উচ্ছেদ ও চাঁদাবাজি বন্ধে আয়োজকদের (ইপিবি) কাছে অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। আর ইপিবির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মেলা প্রাঙ্গণে কোনো হকার প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না এবং এখন (১ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত কোনো হকার মেলায় প্রবেশ করতে পারেনি।
মেলা প্রাঙ্গণে ৯ হকারের সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের। এদের মধ্যে পাঁচজন জানান, মেলায় প্রবেশ করে পণ্য বিক্রি করতে প্রতিদিন গুনতে হয় ৩০০ থেকে দেড় হাজার টাকা। পণ্যের ওপর নির্ভর করে টাকার অঙ্ক। আর মেলার ভেতরে পণ্য বিক্রি করতে যাতে সমস্যা না হয় সে দায়িত্বে রয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মুকুল।
প্লাস্টিকের ফুল বিক্রেতা মো. আলমের কাছে ক্রেতা সেজে দাম জানতে চাওয়ার এক ফাঁকে মেলায় প্রবেশ করতে কতো টাকা দিতে হচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রতিদিন কমপক্ষে ৩৫০ টাকা দিতে হয়। মাল বেশি হলে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকাও দিতে হয়।
খেলনা বিক্রেতা আনোয়ার জানান, মেলায় প্রবেশ করতে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। কারা টাকা নিচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, গেটে যারা দায়িত্বে থাকেন তারাই টাকা নেয়। তবে মূল দায়িত্বে আছেন মুকুল ভাই। পুলিশ বা ইপিবির কর্মকর্তারা কোনো সমস্যা করে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কখনো সমস্যা করলে মুকুল ভাই সমাধান করেন।
ফুল, খাদ্য, খেলনা বিক্রির একাধিক স্টলের মালিক জানান, হকারদের কারণে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা কম বিক্রি হচ্ছে। অথচ মেলায় হকারদের ঢোকার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি।
স্টল কর্তৃপক্ষরা আরও অভিযোগ করেন, শুধু হকার নয়, প্রতিনিয়ত ক্ষমতাসীন দলের নামে স্টল থেকে চাঁদাবাজিও হয়। ‘বিক্রি ভালো হয়নি আজ টাকা দিতে পারবো না’ এমন কথা বললে দোকান থেকে জোর করে পণ্য নিয়ে যায়। এ নিয়েও কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে কিন্তু কাজ হয়নি। বরং অভিযোগ দিলে চাঁদাবাজরা এসে উল্টো হুমকি দিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ইপিবির যুগ্ম সচিব রেজাউল করিম বলেন, মেলায় হকার প্রবেশে নিষেধ আছে। আর চাঁদাবাজির যে অভিযোগ উঠেছে, এ নিয়ে কেউ লিখিতভাবে জানায়নি। তারপরও যেহেতু অভিযোগ উঠেছে তাই ব্যবস্থা নিতে মেলায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের বলা হবে।
এমএএস/এএইচ/জেআইএম