এসএমই ঋণে এখনো উচ্চহারে সুদ নিচ্ছে ব্যাংকগুলো
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) ঋণে এখনো উচ্চহারে সুদ নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। একইসঙ্গে ঋণ গ্রহণে দীর্ঘসূত্রতার পাশাপাশি বিভিন্ন হয়রানির শিকার হচ্ছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা।
বৃহস্পতিবার মতিঝিলের ফেডারেশন ভবনে ‘এসএমই খাতে অর্থায়ন : সমস্যা ও উত্তরণ’ শীর্ষক এক সেমিনারে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা এসএমই খাতের উদ্যোক্তারা এ অভিযোগ করেন। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
উদ্যোক্তারা বলেন, আমরা প্রায়ই শুনি বাংলাদেশ ব্যাংক এসএমই খাতে অনেক সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। ব্যাংকগুলোকে সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ দিতে বলছে। কিন্তু আমরা তা পাচ্ছি না। বরং ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে পদে পদে হয়রানির শিকার হচ্ছি।
সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংকেই ১২ থেকে ১৬ শতাংশ হারে সুদ নিচ্ছে উল্লেখ করে তারা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান চালিকাশক্তি এসএমই খাত। জিডিপির প্রায় ৫২ থেকে ৫৫ শতাংশ এসএমই খাতের অবদান। তাই এ খাত উন্নয়নে সহজ শর্তে সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ প্রয়োজন।
গভর্নর ফজলে কবির বলেন, অনেক উদ্যোক্তা অভিযোগ করেছেন তাদের কাছে এসএমই ঋণের ওপর ১৩ থেকে ১৪ শতাংশ সুদ নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তারা এ অভিযোগ করেছেন। কেন ব্যাংকগুলো এত সুদ নিচ্ছে তা আমি জানি না। তাই ব্যাংকগুলোকে আমি বলবো তারা যেন নারী উদ্যোক্তাসহ এসএমই খাতে সহজ শর্তে কম সুদে ঋণ প্রদান করে।
ব্যাংকগুলোর উদ্দেশ্যে গভর্নর বলেন, ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে আরও সাহসী হতে হবে। নিয়মনীতি পরিপালন করে সাহসী হয়ে ব্যাংকগুলোকে ঋণ প্রদান করতে হবে। এ খাতে সাহসিকতার বিকল্প নেই।
গভর্নর আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কাজ জাতীয় বাজেটের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও তারল্যের ভারসাম্য রক্ষায় মুদ্রানীতি ঘোষণা করা। এখন থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আগ্রাধিকার পাবে এসএমই খাত। ৫ থেকে ১০ শতাংশ হারে কৃষি খাতে ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। আগামীতে এসএমই খাতের ঋণও সিঙ্গেল ডিজিটে আনা হবে।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) আয়োজনে সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ। এছাড়া সহ-সভাপতি, পরিচালকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা ও এসএমই খাতের উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এসআই/আরএস/জেআইএম