মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার : ব্যয় বাড়লো ২৭০ কোটি টাকা
রাজধানীর মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ২৭০ কোটি টাকা বেড়েছে। এর মধ্যে বাংলামোটর থেকে মগবাজার মোড়-মৌচাক পর্যন্ত প্রায় ২ দশমিক ২১ কিলোমিটার ফ্লাইওভার নির্মাণে ব্যয় বেড়েছে ১৫৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা এবং তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড় হতে এফডিসি মোড়-সোনারগাঁও রেলক্রসিং হয়ে হলিফ্যামিলি হাসপাতাল পর্যন্ত প্রায় ২ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার ফ্লাইওভার নির্মাণে ব্যয় বেড়েছে ১১৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ব্যয়বৃদ্ধির পৃথক দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
প্রস্তাবটি ছিলো স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের। স্থানীয় সরকার সচিব আবদুল মালেক স্বাক্ষরিত ওই প্রস্তাব দুটিতে ফ্লাইওভারের নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রকল্প এলাকায় বিভিন্ন সেবা (পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও স্যুয়ারেজ লাইন) প্রদানকারী সংস্থার অবকাঠামো থাকায় প্রতিটি ফাউন্ডেশনের পৃথক নকশা প্রণয়ন করায় পাইল সংখ্যা, দৈর্ঘ্য ও ক্যাপের আকার বৃদ্ধি এবং ভূমিকম্প সহনের জন্য ফ্লাইওভারে পট বিয়ারিং ও শক ট্রান্সমিশন ইউনিট সংযোজনের কারণে ব্যয় ও সময় বেড়েছে।
এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আরোপিত ভ্যাট ও আয়কর বৃদ্ধি এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী দেয়া ফর্মুলা মোতাবেক মূল্য সমন্বয় করার কারণেও ব্যয় বেড়েছে।
প্রস্তাব দুটির সারসংক্ষেপে দেখা যায়, বাংলামোটর থেকে মগবাজার মোড়-মৌচাক পর্যন্ত প্রায় ২ দশমিক ২১ কিলোমিটার ফ্লাইওভার নির্মাণে মূল চুক্তিতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৯৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুযায়ী, এটি এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এর মধ্যে পূর্তকাজে ব্যয় বেড়েছে ২৩ শতাংশ। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ হচ্ছে ৪৫ কোটি ১১ লাখ টাকা। ২০১২ সালের ১৭ অক্টোবর সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ ফ্লাইওভারটি নির্মাণকাজের ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়। যৌথভাবে এ কাজটি পেয়েছে এমসিসিসি-এসইএল-ইউডিসি।
অন্যদিকে সাতরাস্তা মোড় থেকে এফডিসি মোড়-সোনারগাঁও রেলক্রসিং হয়ে হলিফ্যামিলি হাসপাতাল পর্যন্ত প্রায় ২ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার ফ্লাইওভার নির্মাণে মূল চুক্তিতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুযায়ী, এটি এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে পূর্তকাজে ব্যয় বেড়েছে ২৯ শতাংশ। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ হচ্ছে প্রায় ৬০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ২০১২ সালের ৩০ ডিসেম্বর সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ ফ্লাইওভারটি নির্মাণকাজের ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়। যৌথভাবে এ কাজটি পেয়েছে সিমপ্লেক্স-নাভানা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের ‘কনস্ট্রাকশন অব ফ্লাইওভার ব্রিজ ইন ঢাকা (মগবাজার-মৌচাক)’ প্রকল্পটি অনুমোদিত। রামপুরা চৌধুরী পাড়া থেকে মালিবাগ রেলক্রসিং, মৌচাক মোড় ও মালিবাগ মোড় হয়ে একটি অংশ রাজারবাগ পুলিশ লাইন পর্যন্ত এবং অপর অংশটি শান্তিনগর মোড় পর্যন্ত চার লেনবিশিষ্ট ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয় ১,২১৯ কোটি টাকা। বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছিল ২০১১ সাল থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত।
এমইউএইচ/জেএইচ/এমএস