ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

ডলারের বিপরীতে বাড়ছে টাকার দাম

প্রকাশিত: ০৪:৪১ পিএম, ১২ আগস্ট ২০১৪

ডলারের বিপরীতে টাকার মান বাড়ছে। গেল ঈদে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বাড়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রচুর ডলার কিনে দর স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করে আসছে। তবুও টাকার বিপরীতে দাম ধরে রাখতে পারছে না মার্কিন ডলার। তবে ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রা রুপির দর কমছে। আন্তঃব্যাংক মুদ্রা বাজারেই ডলার-টাকার বিনিময় হার ৭৭ টাকা ৫০ পয়সার নিচে নেমে এসেছে। ব্যাংকগুলো ৭৭ টাকারও কম দরে ডলার কিনছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার থেকে ডলার কেনা অব্যাহত রাখলেও বেড়ে যাচ্ছে টাকার দাম।

এ প্রসঙ্গে বিআইডিএস’র গবেষণা পরিচালক জায়েদ বখত বলেন, আমদানি ব্যয় বাড়ার পরও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ২২ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ মজুদ রয়েছে। এ রিজার্ভ দিয়ে সাত মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

গত বৃহস্পতিবার ৭৭ টাকা ৪৮ পয়সা দরে ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এপ্রিলে যা ছিল ৭৭ টাকা ৭৫ পয়সা। সে হিসাবে গত তিন মাসে ডলারের বিপরীতে টাকার দর ২৭ পয়সা বা .৩৫% বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপে প্রায় এক বছর এ একই জায়গায় স্থির ছিল ডলারের দর। মে মাসের শেষের দিকে ডলারের দর কমে ৭৭ টাকা ৬৫ পয়সায় নেমে আসে।

গত দুই আড়াই মাসে তা আরও কমে ৭৭ টাকা ৪৮ পয়সায় নেমে এসেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক বৃহস্পতিবার ৭৬ টাকা ৯৩ পয়সায় ডলার কিনেছে। বিক্রি করেছে ৭৮ টাকা ১৫ পয়সায়। এইচএসবিসি ৭৮ টাকা ১০ পয়সায় ডলার বিক্রি করেছে; কিনেছে ৭৬ টাকা টাকা ৭৬ পয়সায়।

অন্য ব্যাংকগুলোও ৭৭ টাকার কম দরে ডলার কিনেছে। তবে বিক্রি করেছে ৭৮ টাকার ওপরে। তবে বেসরকারি খাতের এনসিসি ব্যাংক গতকাল ৭৬ টাকা ৯০ পয়সায় ডলার কিনে বিক্রি করেছে ৭৭ টাকা ৯০ পয়সা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমান বলেন, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের ধারা অব্যাহত রাখতেই ডলার কেনা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৭ই জুলাই পর্যন্ত ২৭ কোটি ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৫১৫ কোটি ডলার কেনা হয়। ২০১২-১৩ অর্থবছরের কেনা হয়েছিল ৪৭৯ কোটি ডলার। ২০১২ সালের প্রথম দিকে এ ডলারের দর বাড়তে বাড়তে এক পর্যায়ে ৮৫ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। ২০০৩ সালে দেশে ভাসমান মুদ্রা বিনিময় ব্যবস্থা (ফ্লোটিং) চালু হয়। অর্থাৎ বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় ব্যবস্থা বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়।

এর আগ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার-টাকার বিনিময় হার ঠিক করে দিত। সে দরেই ডলার লেনদেন হতো। ২০১২ সালের প্রথম দিকে ডলারের দর বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে ৮৫ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। এরপর থেকে তা কমতে কমতে ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে ৮০ টাকার নিচে নেমে আসে।

অন্যদিকে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া গত শনিবার ৬১ টাকা ৫৫ পয়সায় (রুপি) ডলার কিনেছে। মে মাস শেষে রুপি: ডলারের বিনিময় হার ছিল ৫৯ টাকা। এ হিসেবে দুই মাসে ডলারের বিপরীতে রুপির দর কমেছে ৪ শতাংশের মতো। ২০১৩ সালের আগস্টে রুপির বিপরীতে ডলারের দর বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে ৬৮ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

২০১২ সালের মে মাসে ডলার-রুপির গড় বিনিময় হার ছিল ৫৪ টাকা। গত বৃহস্পতিবার দিন শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের পরিমাণ ছিল ২২.০৫ বিলিয়ন ডলার। গত ৭ই এপ্রিল অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ৩০.১৮ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। যা ২০১২-১৩ অর্থবছরে চেয়ে ১২% বেশি। জুলাই মাসে ১৪৮ কোটি ২৪ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা একক মাসের হিসেবে অতীতের যে কোন মাসের চেয়ে বেশি।

যদিও ২০১৩-১৪ অর্থবছরে আগের বছরের চেয়ে ১.৬% রেমিট্যান্স কম এসেছিল। গত অর্থবছরে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিদেশী সাহায্য দেশে এসেছে। যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ২০% বেশি। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিভিন্ন বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানির জিন্য ৩৮.৫৪ বিলিয়ন ডলারের এলসি (ঋণপত্র) খোলা হয়েছে। যা ২০১২-১৩ অর্থবছরের চেয়ে ১২.২% বেশি।