ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

হোসিয়ারি শিল্পে গাইবান্ধায় ক্ষতির পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ০২:৪১ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা লাগাতার অবরোধ-হরতালে গাইবান্ধার হোসিয়ারি (পোশাক) শিল্পে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে না পেরে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও কারখানা মালিকরা।

প্রতি বছর শীত মৌসুমে ২০০ কোটি টাকার উপরে শীতবস্ত্র বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু, উৎপাদিত শীতবস্ত্র বিক্রি করতে না পেরে চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ী ও কারখানা মালিকরা।

জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কোচাশহর ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামে তিন দশকে ছোট-বড় মিলিয়ে দুই হাজার শীতবস্ত্র তৈরির হোসিয়ারি কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানায় ২০ থেকে ৩০ হাজার শ্রমিক শীতবস্ত্র তৈরি করে আসছেন।

কোচাশহর কুঠিরশিল্প ও হোসিয়ারি মালিক সমিতির সভাপতি মো. মিজানুর রহমান সরকার জাগোনিউজকে বলেন, ‘এখানে উৎপাদিত শীতবস্ত্রের বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ ২০০ কোটি টাকার উপরে। কিন্তু, টানা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় এসব কারখানার কাজকর্ম স্থবির হয়ে পড়েছে। এখানকার উৎপাদিত শীতবস্ত্র বিক্রি করতে না পারায় অনেক কারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।’

কোচাশহরে তৈরি করা শীতবস্ত্র উত্তরাঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে টাঙ্গাইল, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের খুচরা ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যান। আবার ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের অনেক ব্যবসায়ী কোচাশহরে মোটা অংকের অর্থলগ্নি করে পুরো শীত মৌসুমের তৈরি শীতবস্ত্র পাইকারি ক্রয় করেন। কিন্তু, অবরোধ-হরতালের কারণে তারা ঝুঁকি নিয়ে শীতবস্ত্র নিতে আসতে চাচ্ছেন না। শীত মৌসুম শেষ পর্যায়ে এলেও উৎপাদন করা শীতবস্ত্র বিক্রি করতে পারছেন না কারখানা মালিক ও ব্যবসায়ীরা।

কারখানার মালিকরা ব্যাংক ঋণ ও দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কারখানা চালু করেন। এখন তাদের উৎপাদিত শীতবস্ত্র বিক্রি করতে না পারলে ওই সব কারখানা মালিক আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবেন না।

কোচাশহর কুঠির শিল্প ও হোসিয়ারি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হাসান জাগোনিউজকে জানান, এ বছর উৎপাদিত শীতবস্ত্র চাহিদার তুলনায় অনেক কম বিক্রি হয়েছে। যেখানে ডিসেম্বরের মধ্যে উৎপাদিত সকল শীতবস্ত্র বিক্রি করা যেত, সেখানে ফেব্রুয়ারী মাসেও তা বিক্রি করা যাচ্ছে না।

রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা না কাটলে কোচাশহর হোসিয়ারি শিল্পে অপূরণীয় ক্ষতি হবে। এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে কয়েক বছর সময় লাগবে বলে মনে করেন তিনি।

হোসিয়ারি পাইকারী ব্যবসায়ী মামুন মিয়া জানান, কোচাশহরে অবস্থিত কারখানা ছাড়াও নয়ারহাটে শীতবস্ত্রের হাট বসে প্রতিদিন। হাটে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা কেনাকাটা করতেন। বর্তমানে অসংখ্য ছোট-বড় দোকানে বিভিন্ন ধরনের বিপুল পরিমাণ শীতবস্ত্র নিয়ে দোকানিরা বসে থাকলেও ক্রেতার দেখা মিলছে না। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহর-বন্দর থেকে ব্যবসায়ীরা না আসায় শীতবস্ত্র নিয়ে অলস বসে আছেন দোকানিরা।

কোচাশহর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শাহ মো. বোরহান উদ্দিন লেলিন জাগোনিউজকে জানান, এখানকার ব্যবসায়ী ও কারখানা মালিকরা ব্যাংক, বীমা ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন। এখন উৎপাদিত শীতবস্ত্র বিক্রি করতে না পারায় তাদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে।

এছাড়াও তৈরি পোশাক শিল্পের সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িত সকলেই আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে দারি করেন চেয়ারম্যান।

এমএএস/পিআর