যুক্তরাজ্যে সোনালী ব্যাংককে জরিমানা : জড়িতদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা
যেসব কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে সোনালী ব্যাংকের যুক্তরাজ্য শাখাকে ৩৩ লাখ পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মুদ্রা পাচার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংক যুক্তরাজ্য (ইউকে) শাখাকে ৩৩ লাখ পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার এ অর্থ অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। কারণ তারা যে অভিযোগে এ জরিমানা করেছে তাতে আমাদের কিছু করার নেই।’
গুরুতর অনিয়মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সেটি আমাদের বিষয়। অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের লোকদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে। আগে পুরো ঘটনাটি জানতে হবে। তারপর ব্যবস্থা নেব।’
এর আগে যুক্তরাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল কনডাক্ট অথোরিটির (এফসিএ) বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ কার্যক্রমের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংক যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সেবা দেওয়া এবং রেমিট্যান্স পাঠানোর লক্ষ্যে সোনালী ব্যাংক ইউকে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ব্যাংকটির ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা বাংলাদেশ সরকারের। জরিমানা করলেও ব্যাংকটির রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে জানানো হয়েছে। তবে ব্যাংকটি নতুন কোনো গ্রাহকের সঙ্গে কোনো ধরনের লেনদেন করতে পারবে না।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আজ পত্রিকার মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। এমন ঘটনা দুঃখজনক। বিষয়টি আমি ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে দেখবো। এর আগে তারা কোর্টে গিয়েছে সেখান থেকে ফলপ্রসূ কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। জরিমানার টাকা দিতেই হবে। যুক্তরাজ্য শাখা সোনালী ব্যাংকে যে বোর্ড আছে সেখানে ওই দেশের লোকও আছে। সুতরাং দায় শুধু আমাদের একার নয়।’
উল্লেখ্য, মুদ্রা পাচার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংক যুক্তরাজ্য (ইউকে) শাখাকে ৩৩ লাখ পাউন্ড জরিমানা দিতে হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের আর্থিক খাত তদারককারী কর্তৃপক্ষ ফিন্যান্সিয়াল কনডাক্ট অথরিটি (এফসিএ) বুধবার সোনালী ব্যাংককে জরিমানা করার এ তথ্য একটি বিদেশি সংবাদ সংস্থা প্রকাশ করে। জরিমানার এই অঙ্ক বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৩ কোটি টাকার বেশি।
যুক্তরাজ্য সোনালী ব্যাংককে জরিমানার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির মুদ্রা পাচার নিয়ন্ত্রণ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা স্টিভেন স্মিথকে ব্যাংক খাতের এই ধরনের চাকরিতে নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি তাকে ব্যক্তিগতভাবে ১৮ হাজার পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছে।
বিশ্বে সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা মুদ্রা পাচারের বড় ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে গত কয়েক বছর ধরে ব্যাংকগুলোর মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদারের তাগিদ দিয়ে আসছে। এরপরও সোনালী ব্যাংক ইউকে শাখা সে ধরনের কোনো পদেক্ষপ না নেওয়ায় ব্যাংটিকে জরিমানা দিতে হবে।
এমইউএইচ/আরএস/পিআর