মশলা উৎপাদনে এগিয়ে যাচ্ছে প্রাণ
দেশে প্যাকেটজাত মশলার ব্যবহার দিনদিন গৃহিণীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। রান্নায় ব্যবহারে সহজ হওয়ায় এর চাহিদা বেড়ে গেছে অনেকগুণে। প্যাকেটজাত এসব মশলা সরবরাহ করছে দেশের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। তবে তাদের মধ্যে অন্যতম প্যাকেটজাত মশলা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইতোমধ্যেই ক্রেতাদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে প্রাণ।
দেশের অভ্যন্তরে মশলার চাহিদা মেটাতে প্রায় ৭৮ হাজার চুক্তিভিত্তিক কৃষকের সাথে কাজ করছে প্রাণ। তাদের থেকে উৎপাদিত কাঁচামাল সংগ্রহ করে প্রাণ এর প্যাকেটজাত মশলা প্রস্তুত করা হয় বলে জানান, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল।
আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশে মশলা উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাণ চুক্তিভিত্তিক কৃষকদের উন্নত বীজ ও সার সাশ্রয় মূল্যে প্রদান করে চলেছে। পাশাপাশি প্রাণ দেশীয় মশলার জাত উন্নয়নেও কাজ করে যাচ্ছে। প্রাণ এর অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তাগণ সারাবছর এসব চুক্তিবদ্ধ কৃষকদের চাষ পদ্ধতি, ফসল ঘরে তোলা ও সংরক্ষণসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকেন বলে তিনি জানান।
এছাড়া কিছুদিন আগে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গুড়া হলুদে স্বাভাবিকের চেয়ে মাত্রাতিরিক্ত সিসার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যসম্মত ও মানসম্পন্ন গুড়া হলুদ ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে প্রাণের পক্ষ থেকে বেশ কিছু বিষয় নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এগুলো হলো, চুক্তিভিত্তিক কৃষককের কাছে থেকে হলুদ সংগ্রহ করা, কাঁচা হলুদ সিদ্ধ করার সময় রং এর মিশ্রণ যেন না হয়, এসএস এর পাত্রে হলুদ সিদ্ধ করা, কারণ এ পাত্র সিসা সৃষ্টি করতে পারে না। এছাড়া কৃষকের থেকে সংগ্রহের সময় সিসা নির্ণায়ক যন্ত্রের মাধ্যমে হলুদগুলো পরীক্ষা করে থাকে প্রাণের কোয়ালিটি কন্ট্রোলাররা।
পাশাপাশি কাঁচা হলুদ প্রসেসিংয়ের পর প্যাকেটজাত করার পূর্ব পর্যন্ত আরও কয়েকটি ধাপেও এ পরীক্ষা করা হয় বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, প্রাণ এগ্রো লিমিটেডের ফ্যাক্টরি উত্তরবঙ্গের নাটোরে হওয়ায় প্রাণের চুক্তিভিত্তিক কৃষকরা মূলত উত্তরবঙ্গ কেন্দ্রিক। বগুড়া, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, পঞ্চগড়, রংপুর, নীলফামারীর কৃষকদের থেকে মরিচ, হলুদ, ধনিয়াসহ বিভিন্ন মশলা সংগ্রহ করে থাকে প্রাণ।
এছাড়া পার্বত্য অঞ্চলের হলুদের জাত ভালো হওয়ায় সেখান থেকেও হলুদ সংগ্রহ করা হয়। এসব অঞ্চলের বাইরে টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, শরিয়তপুর ও ভোলা থেকেও প্রাণ বিভিন্ন মশলা সংগ্রহ করে থাকে। হলুদের পাশাপাশি হলুদ, মরিচ, ধনিয়া ও জিরার প্যাকেটজাত মশলা প্রস্তুত করে থাকে প্রাণ। বেসিক স্পাইস ছাড়াও প্রাণ মাংসের মশলা, মাছের মশলা, কারি পাউডার, বিরিয়ানি মশলাসহ প্রায় ২৫ ধরনের মশলার মিক্সড স্পাইস প্যাকেটজাত করে।
মশলা নিয়ে প্রাণ এর ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে কামরুজ্জামান কামাল বললেন, দেশে মশলার আমদানি কমাতে ও দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদন বাড়াতে উন্নত প্রজাতির মশলা উদ্ভাবন নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছে প্রাণ।
এছাড়া পর্যায়ক্রমে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলংকা ও মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকায় যেসব মশলার চাহিদা রয়েছে সে সব মশলাও প্যাকেজাত করবে প্রাণ। এসব দেশে প্রাণ এর বিভিন্ন প্যাকেটজাত মশলার প্রচুর চাহিদা রয়েছে বলে জানান তিনি।