বাজেটের আকার বাড়ছে ৪৫ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা
চলতি অর্থবছরের চেয়ে মূল বাজেটের চেয়ে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার বাড়ছে ৪৫ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা। যা সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ২৯ শতাংশ বেশি। এ হিসাবে আগামী অর্থবছরের জন্য তিন লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল দুই লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার বলো সাড়ে ৩ টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদে এই বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে জাতীয় সংসদে এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী মুহিত।
নতুন বাজেট উপস্থাপনা শুরু হয় দেশের অর্থনীতিতে গত সাত বছরের সাফল্যের একটি মাল্টিমিডিয়া প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে বিশাল অংকের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে। এর পরিমাণ হবে দুই লাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। বাকি ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা ঘাটতি বাজেট হিসাবে ধরা হয়েছে।
নতুন অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতির হার ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ।
এই বাজেটের মধ্যে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ২৭ কোটি টাকা; যার এক লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা যাবে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি)।
আর অনুন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ৩২ শতাংশ বেশি।
এই অনুন্নয়ন ব্যয়ের বড় একটি অংশ যাবে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এবং পেনশনে। এর সঙ্গে বিদেশি ঋণের পুঞ্জীভূত সুদ মেটানোর দায়ও রয়েছে।
টানা আটবার এবং ব্যাক্তিগত ১০টি বাজেট দেয়া মুহিত বিশাল এই ব্যয়ের ৭১ শতাংশের বেশি অর্থ রাজস্ব খাত থেকে আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করেছেন।
বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে কর হিসেবে ২ লাখ ৩ হাজার ১৫২ কোটি টাকা আদায় করা যাবে বলে আশা করছেন মুহিত।
এবারের বাজেটে সবচেয়ে বেশি কর আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে, ৭২ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। এই অংক বিদায়ী অর্থবছরের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেশি।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে মূল বাজেটে ভ্যাট থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা ছিল ৬৪ হাজার ২৬২ কোটি টাকা। লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৫৩ হাজার ৯১৩ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা। এটি মোট জিডিপি ১৯ লাখ ৬১ হাজার ১৭ কোটি টাকার ৫ শতাংশ। নতুন অর্থবছরে ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক উৎস থেকে ৩৮ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা ঋণ নেবে সরকার। এর মধ্য থেকে আগে নেয়া বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হবে আট হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। ফলে বিদেশি উৎস থেকে নতুন অর্থবছরে সরকারের নিট ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ৩০ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকা।
এ ছাড়া দেশের ভেতর থেকে নতুন অর্থবছরে ৬১ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা ঋণ নেবে সরকার। এর মধ্যে ব্যাংক থেকে নেয়া হবে ৩৮ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা ও অন্যান্য উৎস থেকে আরো তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ নেবে সরকার।
অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্য পড়তে ক্লিক করুন...
এমএ/এসএইচএস/পিআর