ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

বেতন আর সুদেই যাবে বাজেটের তিন ভাগের এক ভাগ

প্রকাশিত: ০৪:০৮ পিএম, ২৬ মে ২০১৬

আসছে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও সুদ পরিশোধ বাবদ সরকারকে খরচ করতে হবে মোট বাজেটের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। বাজেটে এজন্য বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৯১ হাজার কোটি টাকা।

এর মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য থাকছে ৫১ হাজার কোটি আর ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য ৪০ হাজার কোটি টাকা।

আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, আগামী বাজেটে সরকারি চাকরিজীবীদের বর্ধিত মূল বেতনের সঙ্গে কার্যকর হচ্ছে ভাতা সুবিধার অংশ। এ কারণে সরকারের ব্যয় এ খাতে আরো বাড়বে। এ জন্য এ খাতে মোট ৫১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে। চলতি বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৪২ হাজার কোটি টাকা। এ হিসেবে নতুন বাজেটে বাড়তি ব্যয় দাঁড়াবে ৯ হাজার কোটি টাকা।

জাতীয় বাজেটের বড় একটি অংশ খরচ হয় সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা খাতে। বর্তমানে এ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ মোট বাজেটের ২১ শতাংশ ও জিডিপির প্রায় ৪ শতাংশ, যা আগে ছিল মোট বাজেট বরাদ্দের ১৮ শতাংশ ও জিডিপির ৩ শতাংশ।

উল্লেখ, ২০১৫ সালের ১ জুলাই সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য অষ্টম বেতন কাঠামো কার্যকর করা হয়। বর্ধিত সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন তারা।

অন্যদিকে আসন্ন বাজেটে সুদ পরিশোধ বাবদ ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৫ হাজার কোটি টাকা বেশি। শতাংশের হিসেবে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।

চলতি অর্থবছরে সুদ পরিশোধে বরাদ্দ ছিল ৩৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধে রাখা হয়েছে ৩৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে ১ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা।

প্রতিবছর বাজেটের আকার বাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে সুদ পরিশোধে ব্যয়ের পরিমাণও বেড়ে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, সামর্থ্যের চেয়ে বড় আকারের বাজেট দেয়ার কারণে প্রতিবছর ঘাটতি বাড়ছে।  ঘাটতি পূরণে সরকারকে বিদেশি ও দেশি উৎস থেকে নিতে হচ্ছে বাড়তি ঋণ। এতে ঋণ ও সুদের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। তাদের আশঙ্কা এভাবে ঋণ ও সুদের পরিমাণ বাড়তে থাকলে এক সময় সুদ ও ঋণের ভারে বাজেট এমন ভারী হয়ে উঠবে, যা টানা সম্ভব হবে না।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে দেশি-বিদেশি মিলে দেশের প্রায় ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ ডলারের ঋণ রয়েছে, যা জিপিডির ৩৪-৩৫ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে সুদ বাবদ খরচ হবে চলতি অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেটের অর্ধেকের সমান। রাজস্ব আহরণ না বাড়াতে পারলে আগামী রাজস্বের প্রায় পুরোটাই চলে যাবে সুদ পরিশোধে। উন্নয়নের জন্য কর আদায়ই আগামীতে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেটে ঋণনির্ভরতা কমাতে হলে নিজস্ব সম্পদ বাড়াতে হবে। সরকার দেশি-বিদেশি ঋণ নেয়ায় সুদ বাবদ ব্যয় বাড়ছে। সরকার বড় বড় প্রকল্প নিচ্ছে। কিন্তু বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে না। একই জায়গায় আটকে আছে। তবে দেশি-বিদেশি ঋণ নিয়ে এসব প্রকল্প করলে তা সুফল বয়ে আনবে না। কেননা এ ক্ষেত্রে বিদেশি ঋণের দায় অনেক, যা দেশের মানুষের পক্ষে বহন করা কঠিন হয়ে পড়বে।

এমএ/এনএফ/পিআর

আরও পড়ুন