ঈদের কেনাকাটা
জমজমাট বেইলি রোডের শাড়ির বাজার

কেউ খুঁজছেন জামদানি, তো কেউ খুঁজছেন কাতান। বেনারসি, মসলিনসহ এরকম নানান বাহারি শাড়ির পসরা সেজেছে রাজধানীর বেইলি রোডে। প্রতিবছর ঈদ এলেই শাড়ি বেচাকেনার ধুম পড়ে যায় এখানে। এবারও ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ১৫ রোজার পরই জমে উঠেছে বেইলি রোডের বেচাকেনা।
শাড়ির জন্য বিখ্যাত হলেও বেইলি রোডে সব বয়সী মানুষের হাল ফ্যাশনের সব আইটেম পাওয়া যাচ্ছে। শনিবার (২২ মার্চ) বেইলি রোডের বিভিন্ন শোরুম ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
ক্রেতারা বলছেন, পছন্দের শাড়ি মিললেও দাম কিছুটা বেশি।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
চামেলীবাগ থেকে শাড়ি কিনতে এসেছেন শিরিন আক্তার। তিনি বলেন, মা-শাশুড়ি আর নিজের জন্য শাড়ি নিয়েছি। টাঙ্গাইল আর তাঁতের শাড়ির দাম কিছুটা কম হলেও জামদানি শাড়ির বরাবরের মতো দাম বেশি। কুমিল্লার খাদি তিনটা শাড়ি নিয়েছি ৬ হাজার ৫০০ টাকায়।
রাজধানীর নয়াটোলা থেকে শাড়ি কিনতে এসেছেন ফারিয়া তিথি। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, বেইলি রোডের শাড়ির মান ভালো, ডিজাইনেও বৈচিত্র্য আছে। জামদানি কেনার ইচ্ছা আছে। তবে একই শাড়ি গত বছর যে দামে পাওয়া যেত, এবার তার দাম বেশি মনে হচ্ছে। বাচ্চাদের আগে কিনে দিয়েছি। কাল থেকে রাস্তায় জ্যাম বেড়ে যাবে, যা কেনার আজই কিনে ফেলবো।
বিজ্ঞাপন
তাঁতের শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে ১০০০ থেকে থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে। অন্যদিকে, জামদানি শাড়ির দাম এখানে ৮ হাজার থেকে শুরু করে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সুতি শাড়ি বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ৩০০০ টাকায়।
আরও পড়ুন:
বিজ্ঞাপন
- ‘একযুগে ঈদে সর্বনিম্ন বেচাকেনা মিরপুর বেনারসি পল্লিতে’
- প্রতি সপ্তাহে বাড়ে সোনার দাম, ঈদেও গহনা বিক্রিতে ভাটা
বিক্রেতারা বলছেন, এই রোডের অধিকাংশ দোকানে কাপড় ও ডিজাইনের ওপর নির্ভর করে ১০০০ থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকার পর্যন্ত শাড়ি রয়েছে। অন্যবারের মতো এ বছরও ২০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা দামে সুতি শাড়ি বিক্রি হচ্ছে।
জামদানি শাড়ির দাম বেশি হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে টাঙ্গাইল তাঁতঘর শোরুমের ফজলুল আজিম জাগো নিউজকে বলেন, জামদানি শাড়ির মূল্য এর সুতার মান ও নকশা এবং উপকরণের রকমফেরে ভিন্ন হয়ে থাকে। ৬০ থেকে ৮০ কাউন্ট সুতার জামদানি শাড়ির দাম ৮ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে থাকে। অন্যদিকে, ৮০ থেকে ১০০ কাউন্ট সুতার হাফ সিল্ক জামদানি শাড়ির মূল্য ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়ে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
তিনি বলেন, জামদানি শাড়ির ক্রেতা খুব বেশি নেই। তবে ঈদের আগ পর্যন্ত এই শাড়ির জন্য ক্রেতার আনাগোনা অনেক থাকে। যাদের পছন্দ হয়, মনে ধরে যায় তারা দামের কথা চিন্তা করে না। এছাড়া আমাদের এখানে কুমিল্লা খাদি শাড়ি বেশি চলে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে, মসলিন শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে ১৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার পর্যন্ত। কাতান শাড়ি ৩০০০ থেকে ২৫ হাজার টাকার পর্যন্ত রয়েছে। টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি বিক্রি হচ্ছে ৪০০০ থেকে ৫০০০ টাকায়।
তাঁত কুটির দোকানের ম্যানেজার জাহিদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, সকালে কাস্টমার খুব কম হয়। সন্ধ্যার পর ভিড় জমে। বেশির ভাগ মানুষ ১২০০ থেকে ৩০০০ এর মধ্যে শাড়ি খোঁজেন। আমার মতে, আমি আগের মতো জমজমাট দেখছি না। এই এক সপ্তাহ কাস্টমারের চাপ থাকার কথা। দেখা যাক কী হয়।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন:
- জামা-কাপড়ের সঙ্গে শিশুদের বায়না রঙিন খেলনায়
- ক্রেতাশূন্য ছোট ছোট শপিংমল, হতাশ ব্যবসায়ীরা
- ভারতের শাড়ি ও পাকিস্তানের সারারা-গারারার চাহিদা বেশি
আরেক ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, ঈদের আগের দুই সপ্তাহ বেচাকেনার মূল সময়। গত সপ্তাহ থেকে এই সপ্তাহে বিক্রির প্রত্যাশা বেশি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, হাতেবোনা অনেক ডিজাইনের কারণে শাড়ির দাম বাড়ে। এছাড়া সুতা, রং ও অন্যান্য উপকরণের দাম বেড়ে গেছে, ফলে শাড়ির দামও স্বাভাবিকভাবে বেড়েছে।
বিজ্ঞাপন
সিরাজ ক্যাপিটাল সেন্টারের বিভিন্ন দোকানে দেখা গেছে, বাহারি শাড়ির সমাহার। টাঙ্গাইল, জামদানি ও তাঁতের শাড়ির পাশাপাশি এমব্রয়ডারি, কাটওয়ার্ক, পুঁতি ও জরির কাজ করা শাড়ি এখানে বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, এখনো সেভাবে জমেনি বেচাবিক্রি। তবে চাঁদরাত পর্যন্ত সময় আছে। তারা আশা করছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে এবার ভালো বেচাকেনা হবে।
আরএএস/এসএনআর/এমএস
বিজ্ঞাপন