‘বিনার সূর্যমুখী জাত অবমুক্ত হলে তেল ফসলে বিপ্লব ঘটবে’
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সূর্যমুখী একটি সম্ভাবনাময় তেল ফসল। শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী হওয়ায় দেশে ক্রমেই বাড়ছে সূর্যমুখী তেলের চাহিদা। এরই মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) উদ্ভাবিত তিনটি জাত কৃষকদের মধ্যে নতুন আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। কৃষকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সূর্যমুখী নিয়ে কাজ করছে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা)। তাদেরও তিনটি জাত অ্যাডভান্স লাইনে রয়েছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে জাত তিনটি অবমুক্ত করা হবে বলে আশা করছেন প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞানীরা। এই জাত অবমুক্ত হলে কৃষকদের মধ্যে বিপ্লব ঘটাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি (বিনা অঙ্গ) প্রকল্পের উপ-প্রকল্প সমন্বয়ক ড. রেজা মোহাম্মদ ইমন জাগো নিউজকে বলেন, সূর্যমুখীতে আমরা কোনো ভ্যারাইটি এখনো দিতে পারিনি। তবে অ্যাডভান্স লাইনে আছে। আমাদের খুব ভালো অ্যাডভান্স লাইন আছে। যেগুলোর খুব ভালো ভ্যারাইটি আসবে। ফলন ভালো, তেলের পরিমাণ বেশি এবং এটা হেলে পড়বে না, মাঝারি উচ্চতার- যেটা কৃষক চায়। তবে এই জাত উদ্ভাবন করতে আমাদের আরও বছর তিনেক লাগবে।
‘কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের উদ্ভাবিত জাতের মাথাটা একটু নিচের দিকে থাকবে। গাছের উচ্চতা হবে মাঝারি। তেলের পরিমাণ বেশি। এটা কৃষকের মধ্যে জনপ্রিয় হবে বলে আশা করি। বারির চেয়ে আমাদের অগ্রবর্তী লাইন আরও ভালো। বিনার জাত উদ্ভাবন হলে কৃষকের মধ্যে বিপ্লব ঘটাবে বলে আশা করি।’
বিনার তথ্যমতে, সূর্যমুখী তেলে শরীরের জন্য অত্যাবশ্যকীয় লিনোলিক অ্যাসিড রয়েছে ৪০-৪৫ শতাংশ এবং এটিতে ক্ষতিকারক ইরোসিক অ্যাসিড নেই। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে এটি ব্যাপকভাবে চাষ হলেও বাংলাদেশের কিছু জেলায় সীমিত আকারে চাষ হচ্ছে। সূর্যমুখী বীজে তেলের পরিমাণ ৪২-৪৪ শতাংশ। এক্ষেত্রে ঘানিতে ২৫ শতাংশ ও এক্সপেলারে ৩০-৩৫ শতাংশ পর্যন্ত তেল নিষ্কাশন করা সম্ভব। বর্তমানে বাংলাদেশে এক হাজার হেক্টর জমি থেকে প্রায় দুই হাজার মেট্রিক টন সূর্যমুখী উৎপাদিত হয়।
বিনা উদ্ভাবিত তিনটি জাত অবমুক্ত হলেও কৃষক পর্যায়ে উচ্চ ফলনশীল ও প্রতিকূলতা সহনশীল জাতের চাহিদা রয়েছে। যেহেতু সূর্যমুখী রবি (মধ্য নভেম্বর-মধ্য ডিসেম্বর) ও খরিফ-১ (মধ্য এপ্রিল- মধ্য মে) উভয় মৌসুমে চাষ করা যায়, তাই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ দুই মৌসুমের পতিত জমি অতি সহজেই সূর্যমুখী চাষের আওতায় আনা সম্ভব। খাটো ও হাইব্রিড জাতের প্রতি কৃষকদের প্রবল আগ্রহ। তাই প্রচলিত জাত অপেক্ষা উন্নত জাত উদ্ভাবন ও মানসম্মত বীজের ব্যবহার এবং অনুমোদিত উন্নত চাষাবাদ পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে ফলন বাড়ানো, প্রচলিত শস্য বিন্যাসে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে রোপা আমন-পতিত-বোরোর স্থলে রোপা আমন-সূর্যমুখী-বোরো ও রোপা আমন-পতিত-পতিত এর স্থলে রোপা আমন-সূর্যমুখী-পতিত শস্য বিন্যাস অন্তর্ভুক্ত করা যায়। এছাড়া লবণাক্ত এলাকার পতিত জমি সূর্যমুখী চাষের আওতায় এনে দেশে সূর্যমুখীর মোট উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।
বর্তমানে সীমিত আকারে চাষাবাদ হচ্ছে পটুয়াখালী, রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া, নাটোর, পাবনা, দিনাজপুর, গাজীপুর, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন জেলায়।
বাংলাদেশে সূর্যমুখী আবাদ বাড়াতে কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছে বিনা। যেমন- বর্তমানে চাষ করা জাত অপেক্ষা খাটো ও হাইব্রিড জাত উদ্ভাবনের লক্ষ্যে গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করা, কৃষক পর্যায়ে সরকারি ও বেসরকারি বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে মানসম্মত বীজের সরবরাহ নিশ্চিত করা, কৃষকদের দেশে উৎপাদিত জাতগুলোর বীজ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে ব্যাপকভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। এর মধ্য দিয়ে দেশে উদ্ভাবিত জাতের বীজের ব্যবহারে উৎপাদন খরচ কমানো ও অধিক মুনাফা লাভ করা সম্ভব।
বিনা জানায়, রোপা আমন-পতিত-পতিত শস্য বিন্যাসের আওতায় চাষযোগ্য এলাকায় ৫ দশমিক ১০ মিলিয়ন হেক্টর জমি রয়েছে। এসব এলাকায় পতিত জমিতে সূর্যমুখী চাষের মাধ্যমে উল্লিখিত পরিমাণ জমি চাষের আওতায় এনে অন্তত ১২ লাখ হেক্টর জমিতে দশমিক ৯৪ লাখ টন অতিরিক্ত তেল উৎপাদন করা সম্ভব। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ লবণাক্ত এলাকায় রোপা আমন-পতিত-পতিত শস্য বিন্যাস অনুসরণ করা হয়। এসব অঞ্চল সূর্যমুখী চাষের আওতায় আনা ও সূর্যমুখী তেলের উপকারিতা সম্পর্কে সর্বস্তরের জনগণের সচেতনতা বাড়ানো, কৃষক ও সম্প্রসারণ কর্মীদের যোগাযোগ শক্তিশালীকরণ এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে সার্বিকভাবে সূর্যমুখীর উৎপাদন বাড়ানো।
এএ/এইচএ/এমএস
টাইমলাইন
- ০১:২৪ পিএম, ২২ ডিসেম্বর ২০২১ ‘বিনার সূর্যমুখী জাত অবমুক্ত হলে তেল ফসলে বিপ্লব ঘটবে’
- ০৮:৫৫ এএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ ‘সড়ক’ যেন গলার কাঁটা
- ০৮:৪৯ এএম, ০৯ ডিসেম্বর ২০২১ বোরোর চরের কাঁচামরিচ যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপে
- ০৯:০৫ এএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০২১ বিলুপ্তির পথে লাফা বেগুন, বেশি ফলনের বেগুনে ঝুঁকছেন কৃষক
- ০৮:৩০ এএম, ০৭ ডিসেম্বর ২০২১ বারোমাসি টমেটোয় ১০ গুণ লাভ
- ০৩:৫৬ পিএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০২১ সম্ভাবনার কুমির চাষে ‘বাধা’ আইনি জটিলতা!
- ১২:১৫ পিএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০২১ সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে মালচিং চাষ, কম খরচে ভালো ফলন
- ০৮:৩৩ এএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০২১ লেবু-মাল্টার জোয়ারে হারাতে বসেছে ফুলবাড়িয়ার হলুদ
- ১১:১২ এএম, ০৩ ডিসেম্বর ২০২১ শ্বশুরের দেওয়া ৪০ হাজার থেকে ২০ লাখ টাকার মালিক রাণী
- ০৮:০৪ এএম, ০৩ ডিসেম্বর ২০২১ নামাপাড়ার ছিপ যাচ্ছে সারাদেশে
- ১০:১৬ এএম, ০১ ডিসেম্বর ২০২১ এক গাছে ৪ সাইজের বরই, মিলবে আমের মৌসুমেও
- ০৮:২০ এএম, ৩০ নভেম্বর ২০২১ ‘তেল আমদানির ১৭ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করবে বিনাসরিষা’
- ০৪:২১ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০২১ মুক্তা চাষে সম্ভাবনা, বিক্রি নিয়েই দুর্ভাবনা
- ০২:০৭ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০২১ আধুনিক নগর গড়তে দরকার জনগণের ইতিবাচক সাড়া ও দপ্তরের সমন্বয়
- ১০:৫১ এএম, ২৮ নভেম্বর ২০২১ মেঘালয় ঘেঁষা দুই স্থলবন্দর, আমদানি-রপ্তানির নতুন দুয়ার
- ০৭:৫৩ পিএম, ২৬ নভেম্বর ২০২১ তিনবার এমপি হলেও এলাকাবাসীর কাছে প্রায় অচেনা
- ০৯:২৪ এএম, ২৫ নভেম্বর ২০২১ ফুলবাড়িয়ার লেবু যাচ্ছে ইউরোপে
- ০২:০৯ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০২১ কৃষকের ধানের মণ ৪৩ কেজিতে, ব্যবসায়ীর সাড়ে ৪০
- ০৬:৩৮ পিএম, ২৩ নভেম্বর ২০২১ ২২ পদের ভর্তার পিঠায় মাসে আয় ২ লাখ টাকা
- ০৮:২২ এএম, ২৩ নভেম্বর ২০২১ চিকিৎসকের পরামর্শে মাল্টাচাষ, লাখ টাকা খরচে আসছে কোটি টাকা
- ০২:৫৩ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২১ ‘কৃষ্ণা কেবিন’র মিষ্টিতে ‘কৃতকার্য’ তিন প্রজন্ম
- ১০:৫৯ এএম, ১৯ নভেম্বর ২০২১ দেশি ছোট মাছ ফিরিয়ে আনতে বিপ্লব ঘটাবে জিন ব্যাংক
- ১২:১০ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০২১ বছরে নষ্ট ২০ হাজার কোটি টাকার ফসল, আসছে পরমাণু প্রযুক্তি
- ০৮:৫৮ এএম, ১৮ নভেম্বর ২০২১ তেলাপিয়ার নতুন প্রজাতি, প্রতিটির ওজন আড়াই কেজি
- ০৩:২৫ পিএম, ১৭ নভেম্বর ২০২১ পাতে ফেরার অপেক্ষায় জারুয়া-আঙরাসহ আরও ৮ দেশি মাছ
- ১১:৫০ এএম, ১৭ নভেম্বর ২০২১ আ’লীগের দুর্গ গফরগাঁও, একগুচ্ছ দাবি ভোটারদের
- ০৯:৫৯ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২১ ‘গরু শিথানে নিয়া হুতি, চোরে নিলে আগে আমারে নেওয়া লাগবো’
- ০৮:৫৭ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২১ এটাই বাংলাদেশের ‘প্রথম’ সৌদি খেজুর গাছ
- ০৪:৪৬ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২১ ‘এখানে আ’লীগ-বিএনপি-জাপা এক পরিবার’
- ০২:১৬ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২১ সৌদি খেজুর চাষে ‘পাগল মোতালেব’র বছরে আয় ৫০ লাখ টাকা
- ১২:১২ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২১ চুলে খুলেছে হাজারো নারীর ভাগ্য