সাতক্ষীরায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, ১৪৪ ধারা জারি

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী ইউনিয়ন শাখার আহ্বায়ক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উপজেলা বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে যুবদল নেতাসহ তিনজন আহত হয়েছেন।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী চৌরাস্তা মোড় এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়।

প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী চলা এই সংঘর্ষ সেনা ও পুলিশ সদস্যদের পদক্ষেপে নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে উভয়পক্ষের ছোড়া ইট-পাটকেলের আঘাতে উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব শেখ আব্দুল আজিজসহ তিনজন আহত হয়েছেন। বর্তমানে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলের আশেপাশের এক কিলোমিটার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।

বিএনপির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দীর্ঘদিন ধরে কালিগঞ্জ উপজেলা বিএনপি দুইটি গ্রুপে বিভক্ত। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলার ১২ ইউনিয়নে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ এবাদুল ইসলাম ও সদস্যসচিব ডা. শফিকুল ইসলামের সই করা পত্রে তারালী ইউনিয়ন বিএনপির ৩১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটিকে পকেট কমিটি আখ্যা দিয়ে রোববার তারালী এবং চাম্পাফুল বাজার এলাকায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের অপর একটি অংশ।

• আরও পড়ুন
  শিক্ষার্থীদের সংঘাতে সরকারের দায় দেখছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন 
  মায়ের ডাকে ছাদ থেকে উঁকি, পড়ে প্রাণ গেলো একমাত্র ছেলের 

এদিকে সোমবার বিকেলে কালিগঞ্জ বাস টার্মিনাল সংলগ্ন তারালী চৌরাস্তা মোড় এলাকায় তারালী ইউনিয়ন বিএনপির নবগঠিত কমিটি বিজয় মিছিলের আয়োজন করে। একই সময়ে অপরপক্ষ উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করে। একপর্যায়ে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপজেলা কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারালী চৌরাস্তা মোড় এলাকায় গেলে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় উভয়পক্ষ ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.) সেতু সংলগ্ন উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রভাষক সাইফুল ইসলামের অফিসের সামনে রাখা ৬/৭ টি মোটরসাইকেল এবং কয়েকটি চেয়ার ভাংচুর করে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডলের উপস্থিতিতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও সেনা সদস্য ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংষর্ষের ঘটনায় উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব শেখ আব্দুল আজিজ, নলতা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুল কাদের ও উপজেলা সাইবার ফোর্সের তথ্য বিষয়ক সম্পাদক সাব্বির আহম্মেদ আহত হন। এর মধ্যে গুরুতর আহত শেখ আব্দুল আজিজকে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন আমাদের গুগল নিউজ চ্যানেল।

কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডল বলেন, বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট সংঘাত ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সোমবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত উপজেলা সদরের ফুলতলা মোড় থেকে বাসটার্মিনাল ও আশপাশের এক কিলোমিটার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আহসানুর রহমান রাজীব/কেএসআর