ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

খড় বিক্রি করে লাখ টাকা আয় কৃষকের

এম মাঈন উদ্দিন | প্রকাশিত: ১০:৫৬ এএম, ০৮ জানুয়ারি ২০২৫

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় আমন মৌসুমের ধান কাটার পর কয়েক বছর আগেও জমির মালিকেরা এসব খড় মানুষকে বিনামূল্যে দিয়ে দিতেন। তবে এখন সময় বদলেছে। খড়ও হয়েছে মূল্যবান বস্তু। শুষ্ক মৌসুমে মাঠে ঘাস না থাকায় এখন খড়ের চাহিদা ব্যাপক। তাই এখন আর কেউ খড় বিনামূল্যে দিতে রাজি নন। ফলে ধান কাটা শেষে এখন কৃষকদের মধ্যে খড় বিক্রির ধুম পড়েছে।

উপজেলার পূর্ব খৈয়াছরা আমনের মাঠে এবার ধান মাড়িয়ে তা ঘরে তোলার পর কয়েকজন কৃষককে মাঠ থেকেই খড় বিক্রি করতে দেখা গেছে। অনেক কৃষক এখন খড় বিক্রি করে লাখ টাকা আয় করছেন বলে জানিয়েছেন।

কৃষক জামান শাহ বলেন, আড়াই কানি জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। নিজের জন্য অল্প খড় রেখে বাকিগুলো ৬১ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। গত কয়েক বছর ধরে বিক্রি করে আসছি।

একই মাঠের কৃষক আরিফ জানান, তিনি ৫ কানি জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। খড় বিক্রি করেছেন ১ লাখ ৫ হাজার টাকায়। গরুর খামারের মালিকরা এসব খড় কেনেন। বর্ষা বা শুকনো মৌসুমে গরুর খাবারের জন্য অনেক সময় কাঁচা ঘাসের সংকট হয়, তখন খড়, কুড়া ও ভূসিই গরুর খাবারের জন্য ভরসা। তাই খামারিরা এই মৌসুমেই গরুর খাবার সংগ্রহ করে রাখেন।

খড় বিক্রি করে লাখ টাকা আয় কৃষকের

পূর্ব দুর্গাপুর গ্রামের খামারি মুক্তার হোসেন বলেন, আগে আশপাশে খালি জমি ছিল। ঘাসের অভাব ছিল না। এখন জমি পড়ে থাকে না। ঘাসের জমির অভাব, তাই খড়ের দামও বেড়ে গেছে। বাজারে গরুর খাবারের দাম বেশি। আমার ছয়টি গরু আছে। এর মধ্যে একটি দুধের গাভি। প্রতিদিন ৩০-৩৫ আঁটি খড় লাগে।

মিরসরাই উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাজী নুরুল আলম জানান, মিরসরাই উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ১৭ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। ধান কাটা প্রায় শেষের দিকে। এক সময় খড়ের অতোটা চাহিদা না থাকায় দামও ছিল না। সময়ের বিবর্তনে এখন চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় খড়ের দামে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ধানে অনেক সময় পুষিয়ে না উঠলেও খড়ে লাভ করতে পারছেন কৃষকরা।

মিরসরাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকিরুল ফরিদ জানান, মিরসরাই উপজেলায় প্রায় ৯৫ হাজার গবাদিপশু রয়েছে। খাবার হিসেবে প্রতিটি গরুকে প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় আঁটি খড় দিতে হয়। বিশেষ করে গাভির জন্য খড় খুবই উপকারী। এজন্য কৃষকেরা বাজার থেকে কেনা গোখাদ্যের চেয়ে ধানের খড়কে বেশি গুরুত্ব দেন। তবে এবার বন্যার কারণে আমন চাষ কমেছে, তাই খড়ও কমেছে। তাই বাড়তি দামেই সবাইকে খড় কিনতে হবে।

এফএ/এএসএম