ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

লিবিয়ায় পাচার

৪২ লাখ টাকায়ও মুক্তি মেলেনি আসাদের, খবর এলো মৃত্যুর

জেলা প্রতিনিধি | মাদারীপুর | প্রকাশিত: ০৬:৩৫ পিএম, ০৩ জানুয়ারি ২০২৫

মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পশ্চিম কমলাপুর গ্রামের বাসিন্দা আসাদ মাতুব্বর (৪০)। সচ্ছলতার আশায় ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে দুই বছর আগে বাড়ি ছাড়েন। তবে সেই স্বপ্ন আর বাস্তবায়ন হলো না। বুধবার (১ জানুয়ারি) সকালে পরিবারের কাছে খবর আসে আসাদ আর বেঁচে নেই।

আসাদ মারা যাওয়ার খবরে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। পরিবারের দাবি, দালালরা অমানসিক নির্যাতন করে তাকে মেরে ফেলেছেন। শুধু মেরেই ক্ষ্যান্ত হননি, মরদেহ ফেরত দিতেও চাচ্ছেন মোটা অংকের টাকা।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আসাদ মাতুব্বর মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পশ্চিম কমলাপুর গ্রামের আবদুল হাকিম মাতুব্বরের ছেলে। দুই বছর আগে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। কয়েকটি দেশ ঘুরে লিবিয়া যান। লিবিয়ায় যাওয়ার পর বন্দি হন মাফিয়ার হাতে। পরিবারের লোকজন আসাদের মুক্তির জন্য কয়েক ধাপে ৪২ লাখ টাকা দেন। তবুও তার মুক্তি মেলেনি।

আরও জানা যায়, দুই বছর আগে আসাদ মাতুব্বরের সঙ্গে মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝিকরহাট গ্রামের স্থানীয় দালাল রুবেল খানের ১৭ লাখ টাকায় ইতালি যাওয়ার চুক্তি হয়। তবে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পরপরই টাকার জন্য দালাল চক্র তাকে একটি বন্দিশালায় আটকে রেখে নির্যাতন করেন। টাকা না দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি নির্যাতন করার দৃশ্য মোবাইলফোনে ভিডিও কলে দেখান তারা। পরে বাধ্য হয়ে কয়েক দফায় দালাল চক্রকে ৪২ লাখ টাকা দেয় আসাদের পরিবার।

বন্দি থেকেও পরিবারের সঙ্গে প্রতিদিন যোগাযোগ করতেন আসাদ। বুধবার (১ ডিসেম্বর) সকালে ফোন আসে আসাদ মারা গেছেন। তবে পরিবারের দাবি, আসাদকে টাকার জন্য পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন দালাল রুবেল ও তার সহযোগীরা।

নিহতের ভাই মাসুদ মাতুব্বর বলেন, ‘আমরা দালাল চক্রের মূলহোতা রুবেল খানকে এ পর্যন্ত ৪২ লাখ টাকা দিয়েছি। তবে আরও টাকা দিতে না পারায় রুবেল ও তার লোকজন মিলে নির্যাতন করে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। আমরা তাদের নামে মামলা করবো।’

নিহতের স্ত্রী রাখি আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামীকে টাকার জন্য দালালরা মেরে ফেলেছে। আমি ভিডিও কলে লাশ দেখতে চাইলে তারা লাশও দেখায়নি। আমি দালালদের বিচার চাই।’

মা কুলসুম বেগম বলেন, ‘লিবিয়ার দালালরা ফোন করে আমার ছেলে মারা যাওয়ার খবর দিয়েছে। আমরা লাশ ফেরত চাই। তবে লাশ নিতে আরও পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেছে দালাল রুবেল ও তার সহযোগীরা। আমরা তাদের বিচার চাই।’

ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উল হাসান বলেন, নিহত আসাদের পরিবার মামলা করলে নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শাহ মো. সজীব বলেন, মাদারীপুরে মানবপাচারের ঘটনা বেশি। এজন্য স্থানীয়দের সচেতন হতে হবে। নিহতের পরিবার মরদেহ দেশে আনার আবেদন করলে প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করবে।

এদিকে অভিযুক্ত রুবেল খানকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি। তার ফোন বন্ধ ও বাড়ি তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসআর/জিকেএস