ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ধর্ষণের পর বিয়ে নিয়ে টালবাহানা, ফাঁস নিলো স্কুলছাত্রী

জেলা প্রতিনিধি | মাদারীপুর | প্রকাশিত: ০৫:৫৭ পিএম, ০৩ জানুয়ারি ২০২৫

মাদারীপুরে সালিশ বৈঠকে ধর্ষণের ন্যায়বিচার না পেয়ে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সালিশকারী ইউপি মেম্বারসহ ১০ জনের নামে থানায় মামলা করা হয়েছে।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। মাদারীপুরের শিবচরে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ, স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় দেড় বছর আগে ওই কিশোরীর (১৪) সঙ্গে প্রতিবেশী পিয়ার সরদারের (১৯) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে শারীরিক সম্পর্কে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে পিয়ার বিয়ের আশ্বাস দিলে গর্ভপাত করানো হয়। এরপর বিয়ে নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন পিয়ার।

বিষয়টি পিয়ারের পরিবারকে জানালে তারা ওই কিশোরীর সঙ্গে বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে বেশ কয়েকবার পরিবারিকভাবে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। সবশেষ মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রতিবেশী রফি মুন্সির বাড়িতে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এতে স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোতাহার হোসেন, স্থানীয় মাদবর উজ্জ্বল খান, তাজেল মাদবর, জাহাঙ্গীর খাসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

সালিশে জানানো হয়, অভিযুক্ত পিয়ার বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। সে কারণে সালিশকারীরা ওই ছাত্রীর সঙ্গে পিয়ারের ছোট ভাইয়ের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিয়ে না হলে অভিযুক্তের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা জরিমানার সিদ্ধান্ত হয়। এই সিদ্ধান্তে সালিশে হট্টগোল শুরু হয়। পরে সেখান থেকে চলে যান সালিশকারীরা। এ ঘটনায় ক্ষোভে বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে ওই কিশোরী।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় কিশোরীর বড় ভাই বাদী হয়ে শিবচর থানায় প্রধান সালিশীকারী ইউপি মেম্বার ও অভিযুক্ত পিয়ারসহ ১০ জনের নামে মামলা করেছেন। ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত পিয়ার হোসেন।

কিশোরীর ভাই বলেন, সালিশকারীরা টাকা-পয়সা খেয়ে তাদের মতো করে সিদ্ধান্ত নেন। এটা আমরা ও আমার বোন মেনে নিতে পারিনি। তাই লজ্জায় আত্মহত্যা করেছে আমার বোন। আমরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার বিচার চাই।

এ বিষয়ে শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকতার হোসেন বলেন, স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসআর/জিকেএস