রাজশাহীতে এক বছরে ৪৪৮ নারী-শিশু নির্যাতনের শিকার
রাজশাহীতে গত এক বছরে ৪৪৮ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১৪৯ জন।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) আইন ও সালিশ কেন্দ্র এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এক বছরে রাজশাহীতে ২৯৯ জন নারী পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে ১৫৭ জন স্বামীর ও ৮৪ জন স্বামীর স্বজনদের নির্যাতনের শিকার হন। স্বামীর হাতে নিহত হয়েছেন ১৪ জন। নির্যাতনের কারণে ১০ জন আত্মহত্যা এবং স্বামীর স্বজনদের হাতে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এক বছরে রাজশাহীতে অগ্নি প্রকল্পের মাধ্যমে ৬৬ মামলা হয়েছে। যেসব মামলায় ২৫৫ নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৫৭ জন। আর স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছেন ৫৩ জন। জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
এতে আরও বলা হয়, এ সময়ের মধ্যে ২৮ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। পাঁচজনকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন সাতজন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে সাতজনকে। যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ৫৪ জন। যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় লাঞ্ছিত হয়েছেন ৩২ জন। এছাড়া প্রেম প্রত্যাখ্যান করায় একজন এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন।
এছাড়া এক বছরে জেলায় ২২ শিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং অগ্নি প্রকল্পের ১৮০ জন স্বেচ্ছাসেবী মাঠপর্যায় থেকে এ তথ্য সংগ্রহ করেছেন বলে জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের অগ্নি প্রকল্পের জেলা ব্যবস্থাপক হাসিবুল হাসান পল্লব। তিনি জানান, নির্যাতনের শিকার নারীদের তারা আইনগত সহায়তা দিয়ে থাকেন বিনামূল্যে। এক বছরে অগ্নি প্রকল্পের মাধ্যমে ৬৬টি মামলা করা হয়েছে। পারিবারিক, যৌতুক ও শিশু উদ্ধারের এসব মামলার মধ্যে ২১টি নিষ্পত্তি হয়েছে। বাকিগুলো চলমান। নিষ্পত্তি হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে ১৮টি মামলায় ভিকটিমের পক্ষে রায় এসেছে।
প্রতিবেদন উপস্থাপন সভায় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের অগ্নি প্রকল্পের ডাটা ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট সাব্বির ইসলাম, বেসরকারি সংস্থা পরিবর্তনের পরিচালক রাশেদ রিপন, আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম বাবু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাখাওয়াত হোসেন/আরএইচ/এএসএম