শ্রমিকদের কর্মবিরতি
মোংলায় জাহাজ থেকে গম-সার-কয়লা খালাস ব্যাহত হচ্ছে
মোংলা বন্দরসহ সারাদেশে পণ্যবাহী নৌযান শ্রমিকদের লাগাতার কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে পণ্য খালাসে। এরই মধ্যে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত ১৩টি বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে ব্যাহত হচ্ছে পণ্য খালাস।
বন্দর কর্তৃপক্ষের ট্রাফিক বিভাগের এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বন্দরের পশুর চ্যানেলে গম, সার, কয়লা ও ক্লিংকারসহ ১৩টি জাহাজ অবস্থান করছে। তবে সেসব জাহাজের পণ্য বোঝাই করতে আসা যে লাইটার বা কার্গো জাহাজ ছিল তাতে পণ্য বোঝাই করা হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকদের কর্মবিরতির ফলে ওইসব কার্গো জাহাজ চলাচল করছে না। এমনকি নতুন করে পণ্য বোঝাই করতে কোনো কার্গো জাহাজও যাচ্ছে না। ফলে বন্দরে অবস্থান করা ১৩টি জাহাজ থেকে পণ্য খালাস মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
চাঁদপুরে কার্গো জাহাজে খুন হওয়া শ্রমিকদের প্রত্যেক পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণসহ বেশ কিছু দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেছেন পণ্যবাহী নৌযান শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১২টা থেকে এ কর্মবিরতি শুরু হয়।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তারা বলেন, সব ধরনের পণ্যবাহী, তেল-গ্যাসবাহী ও বালুবাহী নৌযানের শ্রমিকরা লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছেন। তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে। তবে যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগের বিষয় বিবেচনা করে আপাতত যাত্রীবাহী নৌযান কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশনের মোংলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, মধ্যরাত থেকে সারাদেশে নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। ফলে দেশব্যাপী নৌযান চলাচল, পণ্য পরিবহন ও বোঝাই-খালাসের কাজ বন্ধ থাকবে। এতে সারাদেশের নৌযান সেক্টরে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। এর আগে আমরা দাবি পূরণে আলটিমেটাম দিয়েছিলাম, তা বাস্তবায়ন করলে দেশের নৌপথে আজ এ অচলাবস্থার সৃষ্টি হতো না। এ দায় সরকারকেই নিতে হবে।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- এমভি আল বাখেরা জাহাজে হত্যাকাণ্ডে মাস্টারসহ সাত শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন, হত্যাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার, নিহত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য সরকারিভাবে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা, সব নৌপথে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি ডাকাতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
আবু হোসাইন সুমন/জেডএইচ/এমএস