জঙ্গলে ফেলে দেওয়া অসুস্থ বৃদ্ধের ঠাঁই হলো বৃদ্ধাশ্রমে
গাজীপুর সদর উপজেলায় অসুস্থ বাবাকে জঙ্গলে ফেলে রেখে যান সন্তানরা। পরে পুলিশের মানবিক প্রচেষ্টায় উদ্ধার হন বৃদ্ধ সাকিব আলী সরদার। সবশেষ গাজীপুর সদর উপজেলার মনিপুর বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে ঠাঁই হয় তার।
উদ্ধার হওয়া বৃদ্ধ শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট থানার চরডিপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে। তার এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ঢাকার বাড্ডা এলাকায় বড় মেয়ের বাসায় থাকতেন তিনি।
৪ ডিসেম্বর গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বিকে বাড়ি বৃদ্ধাশ্রমে বৃদ্ধকে নেওয়ার চেষ্টা করেন তার সন্তানরা। কিন্তু বৃদ্ধাশ্রম কর্তৃপক্ষ অসুস্থতার কারণে তাকে রাখতে অপারগতা প্রকাশ করে। পরে সন্তানরা তাকে জঙ্গলে ফেলে চলে যান। অসহায় অবস্থায় তিনদিন সেখানে পড়ে থাকার পর স্থানীয়রা বিষয়টি পুলিশকে জানায়।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম ঘটনাস্থলে গিয়ে বৃদ্ধকে উদ্ধার করেন। এসময় তিনি অত্যন্ত নোংরা অবস্থায় ছিলেন। তার পায়ে মল-মূত্র লেগে ছিল এবং প্রস্রাবের রাস্তার জন্য একটি ক্যানুলা লাগানো ছিল।
স্থানীয়দের সহায়তায় বৃদ্ধকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে টানা ২০ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তবে এতদিনেও তার কোনো সন্তান খোঁজ নিতে আসেননি।
বৃদ্ধের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ছেড়ে দেওয়ার অনুমতি দেয়। এরপর মঙ্গলবার রাতে জয়দেবপুর থানার ওসি আব্দুল হালিম নিজ উদ্যোগে তাকে থানার গাড়ি দিয়ে গাজীপুর সদর উপজেলার মনিপুর বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে কর্তৃপক্ষের কাছে বৃদ্ধকে বুঝিয়ে দেন এবং সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
ওসি হালিম বলেন, এমন অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। আমি চেষ্টা করব, তিনি যেন বাকি জীবন শান্তিতে কাটাতে পারেন।
এ ঘটনায় স্থানীয়রা ওসির মানবিক উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তারা জানান, এমন উদ্যোগ সমাজে মানবিক মূল্যবোধ পুনরুজ্জীবিত করবে।
পুনর্বাসন কেন্দ্রে স্থান পাওয়ার পর সাকিব আলী সরদার বলেন, সন্তানরা আমাকে ফেলে গেলেও আল্লাহ আমাকে সাহায্য করার জন্য এমন মানুষ পাঠিয়েছেন। আমি এই ভালোবাসার জন্য কৃতজ্ঞ।
মো. আমিনুল ইসলাম/জেডএইচ/এমএস