নার্সিং ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থী ভর্তিতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়
চুয়াডাঙ্গায় নার্সিং ইনস্টিটিউটে ৭৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তিতে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিভিন্ন খাতে প্রতিজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ২ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। এমন কিছু অনিয়মের রশিদ জাগো নিউজের হাতে এসেছে। শুধু তাই নয়, ওইসব শিক্ষার্থীর ভর্তির সময় মেডিকেল টেস্টের জন্য বলা হয়। যেই টেস্ট চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালেও করা যায়। তাতে খরচ হয় ৪০০-৫০০ টাকা। অথচ বাধ্যতামূলকভাবে শিক্ষার্থীদের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল মেডিকেল সেন্টারে পাঠিয়ে অতিরিক্ত অর্থে মেডিকেল টেস্ট করানো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চুয়াডাঙ্গা নার্সিং ইনস্টিটিউটে ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কোর্সে ২৫ জন এবং ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে আরও ৫০ জন ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। তাদের ভর্তির জন্য সরকারিভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রতি ৬ হাজার ৮১০ টাকা করে ভর্তি ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। অথচ চুয়াডাঙ্গা নার্সিং ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ সেই সরকারি নিয়ম অমান্য করে অতিরিক্ত ফি ধরে রশিদ তৈরি করেছে।
চুয়াডাঙ্গা নার্সিং ইনস্টিটিউটের ভর্তি ফি’র জন্য অর্থ আদায় রশিদে দেখা গেছে, ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে ১৫টি খাতে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে। এছাড়া ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কোর্সে ১৪টি খাত দেখিয়ে ৮ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করেছে। সে হিসেবে ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে ৫০ জনের কাছ থেকে জনপ্রতি ৩ হাজার ১৯০ টাকা অতিরিক্ত অর্থ হিসেবে আদায় করেছে এবং ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কোর্সের ২৫ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জনপ্রতি আরও ১ হাজার ৬৯০ টাকা করে আদায় করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে নিয়ে পরিশোধ রশিদ ধরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমরা পরে জেনেছি সরকারিভাবে ওই ভর্তি ফি’র খরচ আরও কম। যেহেতু আমাদের রশিদ দিয়েছে সেহেতু আমরা প্রথমে বিষয়টি বুঝতে পারিনি।
তবে এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গায় নার্সিং ইনস্টিটিউটে গেলে প্রতিষ্ঠানটির ইন্সট্রাক্টর ফরিদা ইয়াছমিনের দেখা পাওয়া যায়নি। তার দায়িত্বে থাকা আরেক ইন্সট্রাক্টর সামছুন্নাহারও এসব ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি।
পরে নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইন্সট্রাক্টর ফরিদা ইয়াছমিনের সঙ্গে সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, সব শিক্ষার্থীদের মাধ্যমেই হয়েছে। তারাই সব খরচপত্র করেছে। আর খরচের খাত নির্ধারণ করেছে কমিটির সদস্যরা। আমি একা নির্ধারণ করিনি, এখানে লুকোচুরির সুযোগও নেই।
হুসাইন মালিক/এফএ/এএসএম