ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

আওয়ামী শাসনামলে কুষ্টিয়া

রূপকথাকেও হার মানায় হানিফ-আতার উত্থানের গল্প

আল মামুন সাগর | প্রকাশিত: ০৬:৩৭ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪

আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রভাবশালী কয়েকজন নেতার মধ্যে অন্যতম মাহবুবউল আলম হানিফ। কুষ্টিয়ার স্থানীয় রাজনীতিতে চরম আতঙ্কের আরেক নাম তার দূর সম্পর্কের চাচাতো ভাই আতাউর রহমান আতা। স্থানীয় রাজনীতি থেকে শুরু করে প্রশাসনের সর্বস্তরেই হানিফ আর আতার কথাই ছিল শেষ কথা। এই দুজনের ইশারা ছাড়া কুষ্টিয়ায় যেন একটি গাছের পাতাও নড়তো না। তাদের বিরুদ্ধে এতদিন কারও টুঁ শব্দ করার সাহস ছিল না। পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আত্মীয়তার সুবাদেই হানিফের উত্থান। নিজের সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখতে হানিফই তৈরি করেছেন আতার মতো অনুসারী। কুষ্টিয়ার রাজনীতিতে দুজনরই উত্থান বিস্ময়কর। রূপকথাকেও যেন হার মানায় তাদের সেই গল্প।

হানিফের উত্থান যেভাবে

হানিফের বড় ভাই সাবেক সচিব রশিদুল আলম আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পরিবারের জামাই। হাসিনার ফুফাতো বোনের সঙ্গে রশিদুল আলমের বিয়ে হয়। সম্পর্কের সূত্র ধরে শেখ হাসিনার বেয়াই হন হানিফ। আত্মীয়তার এ সম্পর্কই হানিফের উত্থানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। এক সময় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন হানিফ। ১৯৯৬ সালে কুষ্টিয়া-২ আসন থেকে মনোনয়ন পান হানিফ। তবে পরাজিত হন। এরপর আরও কয়েকবার দলীয় মনোনয়ন পেলেও জয় লাভ করতে পারেননি। ২০০৮ সালে মহাজোট গঠনের পর মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হন হানিফ। ওই আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয় ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে। মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার কারণে দল ক্ষমতায় এলে তাকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী করা হয়। ২০১৩ সালের নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসন থেকে মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন হানিফ।

শেখ হাসিনার সঙ্গে আত্মীয়তার সুবাদে পরে কাউন্সিলে পেয়ে যান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের মতো শীর্ষ পদ। এরপর হানিফকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দলের পদ ভাঙিয়ে গড়ে তোলেন বিশাল সাম্রাজ্য। বাড়তে থাকে তার প্রভাব-প্রতিপত্তি। দলে তার অবস্থান আরও পাকাপোক্ত হয় একাধিকবার একই পদ পেয়ে যাওয়ার কারণে। তবে মন্ত্রী হওয়ার খায়েশ থাকলেও সে আশা পূরণ হয়নি নানান অপকর্মের কারণে। রাজনীতির আড়ালে অর্থ আয় ছিল তার নেশা। তিনি দলের নেতাকর্মীদের পাত্তা না দিলেও বড় বড় ব্যবসায়ীর সঙ্গে আঁতাত করে চলতেন। কুষ্টিয়ায়ও দলীয় নেতাকর্মীদের প্রাধান্য না দিয়ে সব সময় চলতেন বড় বড় ব্যবসায়ী আর টাকাওয়ালাদের সঙ্গে। এভাবে গত সাড়ে ১৫ বছরে অগাধ সম্পদের মালিক বনে গেছেন হানিফ। হানিফের পুরো পরিবার থাকে কানাডায়।

হানিফের বড় ভাই সাবেক সচিব রশিদুল আলম আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পরিবারের জামাই। শেখ হাসিনার ফুফাতো বোনের সঙ্গে রশিদুল আলমের বিয়ে হয়। সম্পর্কের সূত্র ধরে শেখ হাসিনার বেয়াই হন হানিফ। আত্মীয়তার এই সম্পর্কই হানিফের উত্থানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। শেখ হাসিনার সঙ্গে আত্মীয়তার সুবাদে পরে পেয়ে যান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের মতো শীর্ষ পদ। এরপর হানিফকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হানিফ ও তার স্ত্রী ফৌজিয়া আলমের নামে কানাডার নাগরিকত্ব রয়েছে। দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা সত্ত্বেও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান হানিফ। এমনকি এ বিষয়ে অভিযোগ করা হলেও আমলে নেয়নি নির্বাচন কমিশন। কানাডায় হানিফের টাকায় তার কয়েকজন ভাই ও বোনের নামে বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে। সেখানে হানিফের গাড়ি-বাড়িসহ সম্পদ আছে বলে জানা গেছে।

হানিফের হাত ধরে যেভাবে আতার উত্থান

আতাউর রহমান আতা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ষোলদাগ গ্রামের প্রয়াত আব্দুস সাত্তারের ছেলে। আব্দুস সাত্তার আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের বাবা আফসার আলীর চাচাতো ভাই। সেই সূত্রে হানিফ আর আতা চাচাতো ভাই। ২০১৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে থেকে অংশগ্রহণের জন্য শহরের পিটিআই রোডে জায়গা কিনে তিনতলা আলিশান বাড়ি তৈরি করেন হানিফ।

আওয়ামী শাসনামলে কুষ্টিয়া, রূপকথাকেও হার মানায় হানিফ-আতার উত্থানের গল্প
এভাবেই পড়ে আছে দালান-ছবি জাগো নিউজ

জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আতা ২০১২ সালের আগ পর্যন্ত ভেড়ামারায়ই ছিলেন। সেখানে উল্লেখ করার মতো তেমন কিছুই করতেন না তিনি। তখন তার নামও কুষ্টিয়ার কেউই জানতো না। ২০১২ সালে ভেড়ামারা থেকে আতাকে কুষ্টিয়ায় নিয়ে আসেন হানিফ। পিটিআই রোডের ওই বাড়িতে জায়গা হয় আতার। এরপর থেকে আতাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরে যেন আলাদীনের চেরাগ পেয়েছিলেন আতা। অল্প সময়ের মধ্যেই আঙুল ফুলে কলা গাছ বনে যান আতা। ভাই হানিফ ও দলের প্রভাব খাটিয়ে বিগত প্রায় সাড়ে ১৫ বছরে শুধু সম্পদই অর্জন করেছেন আতা। কোনো দিক না তাকিয়ে বাছ-বিচার ছাড়াই দুই হাতে অর্থ কামিয়ে গেছেন। এমনকি দলীয় নেতাদের অনেকেই মনে করেন হানিফের সম্পদ থেকেও আতার সম্পদের পরিমাণ অনেক বেশি।

নেতাকর্মীদের মতে, হানিফের পর আতা ছিলেন কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দ্বিতীয় ব্যক্তি। শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং সদর আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হানিফের চাচাতো ভাই ও এমপি হানিফের স্থানীয় প্রতিনিধি- এসব পরিচয় আতার জন্য স্থানীয় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করাকে সহজ করে দেয়। দিন দিন বাড়তে থাকে তার প্রভাব, দলীয় নেতাকর্মীরাও আসতে থাকেন তার কাছে। অল্প দিনেই শহর ও সদরের রাজনীতিতে তৈরি করেন নিজস্ব বলয়।

২০১২ সালে ভেড়ামারা থেকে আতাকে কুষ্টিয়ায় নিয়ে আসেন হানিফ। পিটিআই রোডের ওই বাড়িতে ওঠানো হয় আতাকে। এরপর থেকে আতাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরে যেন আলাদীনের চেরাগ পেয়েছিলেন আতা। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই আঙুল ফুলে কলা গাছ বনে যান তিনি। ভাই হানিফ ও দলের প্রভাব খাটিয়ে বিগত প্রায় সাড়ে ১৫ বছরে শুধু সম্পদই অর্জন করেছেন আতা। কোনো দিক না তাকিয়ে বাছ-বিচার ছাড়াই দুই হাতে অর্থ কামিয়েছেন। এমনকি দলীয় নেতাদের অনেকেই মনে করেন হানিফের সম্পদ থেকেও আতার সম্পদের পরিমাণ অনেক বেশি।

অভিযোগ আছে, পুরো জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিই নিয়ন্ত্রণ করতেন দুই ভাই মিলে। সব সরকারি দপ্তরের ঠিকাদারি কাজও ছিল তাদের নিয়ন্ত্রণে। এভাবে আতা জিরো থেকে বনে গেছেন শত শত কোটি টাকার মালিক। একসময় একটি মোটরসাইকেলে চড়লেও এখন তার কোটি টাকার একাধিক গাড়ি। স্ত্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হলেও স্বামীর টাকায় তিনিও কোটিপতি। ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাট ও বাড়ি আছে আতার। হানিফ দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় আতা ছিল সবার কাছে আতঙ্কের। দলমত নির্বিশেষে সবাই আতাকে সামলে চলতেন। বিচার-সালিশ থেকে সব খানে আতার কথাই ছিল শেষ কথা। বিএনপির কয়েকজন নেতা ছিল আতার ঘনিষ্ঠ। তাদের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। এমনকি সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনের আগে হানিফের ভোটের কথা বলেও কোটি কোটি টাকা নেওয়া হয়।

দলের নেতারা বলেন, কোরবানির আগে গরু ও ছাগলও আসত উপহার হিসেবে। দেশ ছাড়াও দেশের বাইরে আতার সম্পদ ও অর্থ আছে বলে শোনা যায়।

আতা বাড়িতে থাকলেও সব সময় পাহারা থাকতো। বাইরে বের হলে গাড়ি আগে-পিছে বহর নিয়ে বেড়াতেন। দলের পদ-পদবি ও টেন্ডারে কাজ পেতে আতার কাছে ধরনা দিতে হতো সবাইকে। তার অত্যাচার-নির্যাতনে দল ছেড়েছেন অনেকে। এমনকি ঠিকাদারি কাজও ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন। অবৈধ বালুঘাট, হাট-বাজার, বিল ও বাঁওড় নিয়ন্ত্রণ করতেন আতা। হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আতা সপরিবারে গাঢাকা দেন। তার বাড়ি লুটপাট হয়ে গেছে। একই অবস্থা হানিফের বাড়িরও। আতার স্ত্রীর নামে অবৈধ সম্পদের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা করেছে। তার অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে। যে কোনো সময় মামলা হতে পারে বলে জানা গেছে।

এরপর অর্থ-বিত্তে-সম্পদে ফুলে ফেঁপে ওঠেন আতাউর রহমান আতা। ২০২২ সালে আতার বিপুল অবৈধ সম্পদের ফিরিস্তি তুলে ধরে দুদকে একটি অভিযোগ জমা পড়ে।

এতে বলা হয়, ১০ বছরের ব্যবধানে ভাই হানিফের প্রভাব আর আওয়ামী লীগের পদ-পদবি ব্যবহার করে বাড়ি-গাড়িসহ এক হাজার ১০০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে গেছেন আতা। এই অভিযোগ ওঠার পর ২০২২ সালে দুদক আতার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে। চার্জশিট দাখিল করলেও হানিফের প্রভাবের কারণে স্ত্রীসহ বহাল তবিয়তে ছিলেন আতা।

হানিফ ও তার স্ত্রী ফৌজিয়া আলমের নামে কানাডার নাগরিকত্ব রয়েছে। দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা সত্ত্বেও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান হানিফ। এমনকি এ বিষয়ে অভিযোগ করা হলেও আমলে নেয়নি নির্বাচন কমিশন। কানাডায় হানিফের টাকায় তার কয়েকজন ভাই ও বোনের নামে বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে। সেখানে হানিফের গাড়ি-বাড়িসহ সম্পদ আছে বলে জানা গেছে।

পুরো জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিই হানিফ নিয়ন্ত্রণ করতেন আতার মাধ্যমে। দুই ভাই মিলে জেলার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন। সব সরকারি দপ্তরের ঠিকাদারি কাজও ছিল তাদের নিয়ন্ত্রণে। এভাবে আতা জিরো থেকে বনে গেছেন শত শত কোটি টাকার মালিক। একসময় একটি মোটরসাইকেলে চড়লেও এখন তার কোটি টাকার দামি গাড়ি আছে। স্ত্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হলেও স্বামীর টাকায় তিনিও কোটিপতি। ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাট ও বাড়ি আছে আতার।

আতা জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ কুষ্টিয়া অফিস থেকে সাড়ে ৫ কাঠার প্লট বাগিয়ে নিয়েছেন। শহরের হাউজিং এলাকায় ওই জমিতে সাততলা আলিশান ভবন নির্মাণ করেন। স্কুলশিক্ষিকা স্ত্রীর নামে তিনি ওই সম্পদ করেছেন। এখানে বিনিয়োগের ব্যাপারে আয়কর নথিতে দেখানো হয়েছে মাত্র ৭৫ লাখ টাকা। অথচ ভবন করতেই খরচ হয়েছে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকা বলে আতা ঘনিষ্ঠ এক আওয়ামী লীগ নেতা দাবি করেন।

আওয়ামী শাসনামলে কুষ্টিয়া, রূপকথাকেও হার মানায় হানিফ-আতার উত্থানের গল্প
১৫ বছরে এমন সাম্রাজ্য গড়েছেন হানিফরা-ছবি জাগো নিউজ

এছাড়া কুষ্টিয়া হাইস্কুল মার্কেটে ১২টি, পরিমল টাওয়ারে দুটি ছাড়াও জেলা পরিষদ মার্কেট, সমবায় মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেটে তার একাধিক দোকান আছে। শহরের বটতৈল এলাকায় জেলা পরিষদ মার্কেটের আটটি দোকান নিজ ও স্ত্রীর নামে বরাদ্দ নিয়েছেন। একই মার্কেটে আরও চারটি দোকান আত্মীয়-স্বজনের নামে বরাদ্দ নিয়েছেন। ভেড়ামারায় ২৫ বিঘা জমি কিনে বাগান করেছেন। এছাড়া ২৪ শতাংশ জমি রয়েছে আতার।

তমিজ উদ্দিন মার্কেটের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, কুষ্টিয়া হাইস্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পানির দরে ১২টি দোকান নিজের নামে নিয়ে নেন আতা। এসব দোকান ভাড়া দেওয়া আছে।

একইভাবে বটতৈল জেলা পরিষদ মার্কেটে সব থেকে বেশি দোকান বাগিয়ে নেন আতা। সেখানেও তার নামে আটটি দোকান আছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। একইভাবে শহরের যেখানেই মার্কেট হয়েছে সেখানেই দোকান দিতে হয়েছে আতাকে। জেলা পরিষদ, পরিমল টাওয়ার, সমবায় মার্কেটেও একাধিক দোকান আছে তার। এসব দোকান প্রভাব খাটিয়ে নিজের ও আত্মীয়-স্বজনদের নামে নিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেন, ‘হানিফ-আতা রাজনীতি করার জন্য কুষ্টিয়ায় আসেনি। এসেছিলেন বাণিজ্য করার জন্য। তার সময় দল যেমন ধ্বংস হয়েছে তেমনি বিএনপি ও অন্য দলের গুটিকয়েক নেতা ও ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। এদের মাধ্যমে হানিফ-আতা সিন্ডিকেট করে সব কাজ থেকে টাকা নিয়ে গেছেন। দুই ভাই মিলে দেশের বাইরে টাকা পাচার করেছেন, গাড়ি ও বাড়ি করেছেন সেখানে। নেতাকর্মীরাও তার হাত থেকে রেহাই পাননি।

হাউজিং এলাকার আনিসুর রহমান বলেন, হাউজিংয়ের জমির সঙ্গে স্থানীয় একজনের জমি দখল করে এ বাড়ি নির্মাণ করা হয় কয়েক বছর আগে। আতার নামে হলেও পেছনে ছিলেন হানিফ। লোকজনের চোখ এড়াতেই হানিফ এ বাড়ি আতার নামে করেছেন। এসব ফ্ল্যাট সজ্জিত করতে দেশের বাইরে থেকে টাইলসসহ ফিটিংসের মালামাল আনা হয়। পিটিআই রোডে চার কাঠা জমির ওপর তিনতলা বাড়ি নির্মাণ করেন হানিফ। কাগজে-কলমে আতা ও তার স্ত্রীর নামে হলেও হানিফের অর্থে এ বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। প্রথম দিকে লালন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইনবোর্ড এ বাড়িতে লাগানো হয়। আতার সম্পদ নিয়ে দুদক অনুসন্ধান করার পর সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলা হয়।

এএমএস/এসএইচএস/জেআইএম