আবদুল হান্নান মাসউদ
অপরাধ বুঝতে পেরে সেদিন বায়তুল মোকাররমের ইমামও পালিয়েছিলেন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, এ দেশে অন্যায় করে আর কেউ পার পাবে না। মনে রাখবেন, সেদিন (৫ আগস্ট) নিজেদের অপরাধ বুঝতে পেরে হাসিনা-কাদেরের সঙ্গে বায়তুল মোকাররমের ইমামও পালিয়ে গিয়েছিলেন।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর ইউনিয়নে ওয়েস্টব্যাঙ্ক কলেজ আয়োজিত ‘মাহফিল-এ ইনকিলাব’ ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এদেশের মানুষ স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, নিজের ন্যায্য হিস্যা, মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জাতীয় পতাকার সম্মান রক্ষার জন্য যেমন জীবন দিতে পারে, তেমনি অন্যায় দেখলে ঘুরেও দাঁড়াতে পারে। এ বাঙালিকে আর ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।
আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা আবার তাদের চেহারা দেখাচ্ছে। তারা সমাজের মূল অংশের সঙ্গে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করছে। ফ্যাসিস্টরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু যে সকল রাজনৈতিক দল ওই সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে তাদেরকে বলবো আপনাদের পরিণাম শেখ হাসিনার চাইতেও করুণ হবে।
তিনি আরও বলেন, ভেবেছেন এখনই ক্ষমতায় চলে গেছেন। ফলে যা ইচ্ছা তাই করছেন। মনে করছেন আপনাদের বাধা দেওয়ার কেউ নেই। ৫ আগস্টের আগে ৩ ও ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগও একই কথা ভেবেছিল। তারা ক্ষমতার দাপটে রাজপথে আমার ভাইদেরকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছিল। তারা কিন্তু টিকতে পারে নাই। এক দিনের মাথায় প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বায়তুল মোকাররম মসজিদের ইমাম, ওবায়দুল কাদের থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারকেও পালাতে হয়েছে। পরিণাম কত ভয়াভহ। তাদের পরিণামের দিকে খেয়াল রাখুন।
মাসউদ বলেন, আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, কোনো দেশ যদি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে তাহলে সে দেশের মানচিত্রও ভেঙে খান খান হয়ে যাবে। এখনো ফ্যাসিস্টের দালালেরা দেশে ও দেশের বাইরে বসে এ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারা এদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে উসকানি দিয়ে একটি ঘোলাটে পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ যারা হিন্দু-মুসলমান এক টেবিলে খাবার খায়, একসঙ্গে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যায়, কেনাকাটা করে সেই সমাজে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে দাঙ্গা লাগানো সহজ নয়।
ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে হুশিয়ারি দিয়ে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এ সংগঠক বলেন, যারা দিল্লিতে বসে এদেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে, তারা ভাবছে এদেশ শুধু হাসিনা-মুজিবের। কিন্তু তারা ভুলে গেছে এ দেশ শহীদ তিতুমীরের, এদেশ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, এদেশ মেজর জিয়ার, এদেশ আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর, এদেশ জুনায়েদ আল বাবুনগরীর। তারা ভুলে যায় এদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য কতজন হাসিমুখে জীবন দিয়েছেন। ফাঁসির রশি গলায় পরেছেন। তারা ভুলে যায় এদেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বেগম জিয়া থেকে শুরু করে মতিউর রহমান নিজামী পর্যন্ত অনেকেই দীর্ঘদিন কারাবরণ করেছেন, অনেকে আবার শহীদও হয়েছেন।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক আরিফুর রহমসনসহ আয়োজক ওয়েস্টব্যাঙ্ক কলেজের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ইকবাল হোসেন মজনু/এফএ/এমএস