ফরিদপুরে শিশু হত্যা, গণপিটুনিতে নিহত অভিযুক্ত শাহিন মোল্লা
ফরিদপুরের সদর উপজেলার চরনসিপুর গ্রামে তাহিয়া ইসলাম (৭) নামে এক মেয়ে শিশুকে হত্যার ঘটনায় গণপিটুনিতে শাহিন ওরফে হায়দার মোল্লা (৫৬) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশু তাহিয়া সদর উপজেলার চরনসিপুর গ্রামের জিয়ারত ওরফে জিয়া মোল্লার মেয়ে। শিশুটি সম্পর্কে শাহিন মোল্যার চাচাতো নাতনি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে খেলতে গিয়ে চরনসিপুর গ্রামে নিখোঁজ হয় তাহিয়া ইসলাম। নিখোঁজের পর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে তার বাবা কোতয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এ ঘটনায় পুলিশ বুধবার সন্ধ্যার দিকে গিয়ে ওই এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় পুলিশের সন্দেহ হলে পাশের বাড়ির শাহিনুর ওরফে হায়দার মোল্লার বাড়িতে অভিযান চালায়। পরে তার ঘরের ভেতর থেকে পুলিশ একটি বস্তায় বিদ্যুতের তার পেঁচানো অবস্থায় তাহিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে।
এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা শাহিন মোল্লার বাড়ি ঘিরে ফেলে। পুলিশ শাহীন মোল্লাকে হ্যান্ডকাপ পরানো অবস্থায় ঘরের ভেতর আটক করে রাখে। স্থানীয়রা বার বার পুলিশের কাছে শাহীন মোল্লাকে তাদের হাতে ছেড়ে দিতে চাপ সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা ঘর ভেঙে ঘরে ঢুকে শাহীন মোল্লাকে গণপিটুনি দেয়।
অম্বিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, উত্তেজিত জনতাকে থামাতে বার বার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। জনতা শাহীনকে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলে।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, নিখোঁজ শিশুকন্যার খোঁজে এলাকায় পুলিশ তদন্তে প্রতিবেশী শাহীন মোল্লাকে সন্দেহ করে এবং অভিযান চালিয়ে তার ঘর থেকে তাহিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা উত্তেজিত জনতাকে থামাতে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তারা ঘরের পেছন থেকে ভেঙ্গে ঢুকে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলে।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) শৈলেন চাকমা বলেন, হত্যার আগে শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না, তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। লাশ দুটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এন কে বি নয়ন/জেডএইচ/