ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বাঁশ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টায় কয়েকটি পরিবার

জেলা প্রতিনিধি | বরিশাল | প্রকাশিত: ০৮:০২ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০২৪

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় হারিয়ে যাওয়া বাঁশ শিল্পকে আঁকড়ে ধরে এখনো জীবন ধারণ করছে উপজেলার অর্ধশতাধিক পরিবার। বাঁশ থেকে তৈরি ডালা, কুলা, চালন, খৈইচালা, জালি, ঝাপনি, চাঙ্গারি, বাচ্চাদের ছোট কুলাসহ হরেক রকমের পণ্য বিক্রি করে নিজেদের যেমন বাঁচিয়ে রেখেছেন, ঠিক তেমনি দেশীয় ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছে পরিবারগুলো।

সরজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার থানা সংলগ্ন বাঁশের তৈরি বিভিন্ন সরঞ্জাম বিক্রি করছেন প্রতুল। তিনি জানান, অতীতে গ্রামগঞ্জে বাঁশের তৈরি পণ্যসামগ্রীর কদর ছিল। এসব পণ্য শোভা পেতো প্রত্যেক বাড়িতে। বাঁশের তৈরি তৈজসপত্রই ছিল সংসারের মূল ভরসা। কিন্তু কালক্রমে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বাঁশ শিল্পে ভাটা পড়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহার ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন প্লাস্টিক পণ্যের কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঁশ শিল্প।

কিন্তু পূর্ব পুরুষের ব্যবসাকে এখনো ধরে রেখেছেন উপজেলার পূর্ব বাকাল গ্রামের প্রতুল বাকচী, গৈলা গ্রামের অরুণ হালদারসহ আরও অনেকেই।

বাঁশ শিল্পের কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গ্রামের পুরুষরা বিভিন্ন বাগান থেকে ভালো ও লম্বা মানের বাঁশ সংগ্রহ করেন। পরে সেই বাঁশ প্রথমে ছেঁচে পণ্যের আকার অনুযায়ী কেটে নেয়। কেটে নেওয়া অংশ থেকে বাঁশের পাতলা ও চিকন চাঁচ তৈরি করে তা দিয়ে ডালা, কুলা, চালনসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি করেন। একজন কারিগর দিনে ৪-৫টি বড় মাপের ডালি তৈরি করতে পারেন। পাইকারদের কাছে এই ডালা বিক্রি করেন ৭০-৮০ টাকা করে। আর খোলা বাজারে এই ডালা বিক্রি হয় ১০০-১২০ টাকা।

বাঁশ বিক্রেতা মো. আবুল হোসেন বলেন, আমাদের বাঁশ বিক্রি নেই বললেই চলে। এখন মানুষ বিল্ডিংয়ের প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন। তাই বাঁশ ব্যবহার দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। সবুজ কালারের বাঁশ এখন শুকিয়ে সাদা হয়ে নষ্ট হওয়ার পথে। বর্তমানে দিনে হাজার টাকাও বিক্রি করা কষ্ট হয়ে যায়। আগে দিনে ২০-৩০ হাজার টাকাও বিক্রি করেছি।

স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম জানান, বাঙালির ঐতিহ্য এসব পণ্য এখনো এলাকার ঘরে ঘরে ব্যবহার হয়ে আসছে। বাঁশের তৈরি বাহারি পণ্যও বেচাকেনা হয়ে থাকে ভালো।

বাঁশ শিল্পের ব্যবসায়ী আবু আব্দুল্লাহ জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধর এই ব্যবসা করছেন। প্রতি হাটে ৭-৮ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেন। এছাড়া গ্রামের হাট-বাজারে বাঁশের তৈরি এসব পণ্য বিক্রি করেন। তাতে তার ভালো আয় হয়।

আরেক ব্যবসায়ী মো. জাকারিয়া জানান, বিভিন্ন হাটে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বাঁশের তৈরি পণ্যের ব্যবসা করছেন। এখানে প্রতিটি পণ্য পিস ডালা বিক্রি হয় ৭০ টাকা, কুলা ১০০ টাকা, চালন ৮০ টাকা, ডালি ১০০ টাকা, ঝাঁপি ৪০ টাকা থেকে ১০০ টাকা খুচরা বিক্রি করা হচ্ছে।

উপজেলার রাংতা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার পরিবারে সারা বছরই বাঁশের তৈরি পণ্য ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে প্লাস্টিকের পণ্যের ব্যবহার বেড়েছে। আমাদের স্বার্থেই পরিবেশ বান্ধব এই শিল্পকে ধরে রাখতে হবে।

শাওন খান/জেডএইচ/এএসএম