ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

অন্যের জমি নিজের মায়ের দেখিয়ে স্কুলে দানের অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি | কিশোরগঞ্জ | প্রকাশিত: ১১:৩৪ এএম, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরকাওনা জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল আউয়াল ও সহকারী শিক্ষক মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে অন্য মানুষের জমি জাল দলিল করে নিজের মায়ের নামে দেখিয়ে স্কুলে দান করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে বর্তমান স্কুল কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন একই এলাকার মো. রবিউল আউয়াল নামের এক ব্যক্তি। অভিযোগটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চরকাওনা জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়টি আগে একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল। পরবর্তীতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুল আউয়াল ও সহকারী শিক্ষক মো. রুহুল আমিন অন্যের মালিকানাভুক্ত নিম্ন তফসিল বর্ণিত জমি তাদের মায়ের জমি দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে ১৯৯৬ সালের ১৩ আগস্টে ৪৩৭৯নং রেজিস্ট্রিকৃত একটি বানোয়াট দলিল বানিয়ে ৭৬ শতাংশ জমি জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে লিখে দেন। যা প্রতারণা বা দুর্নীতির শামিল। তবে কোনো কাগজপত্রে সেই জমিতে প্রধান শিক্ষক আবদুল আউয়াল ও সহকারী শিক্ষক মো. রুহুল আমিনের মায়ের কখনো কোনো স্বত্ব মালিকানা ছিল না এবং বর্তমানেও নাই। তারা সেই মিথ্যা বানোয়াট দলিল দেখিয়ে দুর্নীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে নবম ও দশম শ্রেণির পাঠদানের অনুমতি গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে মাধ্যমিক পর্যায়ে এমপিওভুক্তি গ্রহণ করেন।

আবদুল আউয়াল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক মো. রুহুল আমিন সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি গ্রহণ করেন। অদ্যাবধি তারা উক্ত ৭৬ শতাংশ ভূমি গোপন রেখে শিক্ষকতা করে আসছেন। আজও পর্যন্ত বিদ্যালয় উক্ত ভূমির মালিকানা লাভ করেনি এবং দখলপ্রাপ্তও হয়নি।

কর্তৃপক্ষের আদেশ থাকলেও আজ পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক আরএস রেকর্ডমূলে বিদ্যালয়ের নামে নামজারী করে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে পারেননি। প্রকৃত মালিক ও মালিকের ওয়ারিশরা উক্ত ভূমি বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট সাফ কাওলা দলিল মূলে বিক্রি করে দিয়েছেন। তাতে প্রধান শিক্ষক কোনো বাধাও প্রদান করেননি। প্রধান শিক্ষক আব্দুল আউয়াল অবৈধভাবে সহকারী প্রধান শিক্ষককে বাদ দিয়ে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় অবৈধভাবে প্রধান শিক্ষক পদেও নিয়োগপ্রাপ্ত হন। তিনি বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নত করতে পারেননি এবং একজন ব্যর্থ শিক্ষক বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

অন্যের জমি নিজের মায়ের দেখিয়ে স্কুলে দানের অভিযোগ

অভিযোগ রয়েছে, আব্দুল আউয়াল প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে বিভিন্ন শিক্ষক ও কর্মচারী পদে বিপুল অংকের টাকা ঘুস নিয়ে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন এবং ঘুসের টাকা দিয়ে পাকুন্দিয়া পৌরসভার মধ্যে জমি কিনেছেন ও তার ছেলের নামে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যাংকে জমা রেখেছেন। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক এনটিআরসিএ নিবন্ধন সার্টিফিকেট জাল ও সৃজন করে বিপুল অংকের টাকা ঘুস নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ করেন। প্রধান শিক্ষক আবদুল আউয়ালের ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযোগকারী রবিউল আউয়াল বলেন, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল আওয়াল ও সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিন অন্যের মালিকানাভুক্ত জমি তাদের মায়ের জমি বলে দলিলে প্রকাশ করে মিথ্যা বানোয়াট ও জাল দলিল বানিয়ে স্কুলের নামে লিখে দিয়ে দুর্নীতি করেছেন। বর্তমানে ওই জমির মূল্য আনুমানিক ২ কোটি টাকার ওপরে। প্রধান শিক্ষক আবদুল আওয়াল বিপুল পরিমাণ টাকা ঘুস নিয়ে কারিগরি শাখার শিক্ষিকা নাজমা আক্তারসহ একাধিক জনের এনটিআরসিএ সার্টিফিকেট জাল করে অবৈধভাবে শিক্ষক পদে নিয়োগ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল আউয়ালের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে, তাই এখন এ বিষয়ে কথা বলবেন না।

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন লিখত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। স্কুলের জমি ছাড়াও আরও কয়েকটি বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে, এগুলো তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসকে রাসেল/এফএ/এএসএম