প্রত্যন্ত গ্রামে গড়ে উঠেছে মিনি চিড়িয়াখানা
দিনাজপুরের পার্বতীপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে গড়ে তোলা হয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা। যেখানে পশু-পাখি ও শিশুদের খেলনাসহ রয়েছে সেলফি বুথ।
শখের বশে দুম্বার খামার থেকে গড়ে ওঠা মিনি চিড়িয়াখানা দেখতে প্রতিনিয়তই বাড়ছে দর্শনার্থী। এই চিড়িয়াখানায় বিড়াল ক্যাফেতে অনেকে জন্মদিন ও বিবাহবার্ষিকীর মতো অনুষ্ঠান করছেন।
এটি গড়ে তুলেছেন দিনাজপুরের ইঞ্জিনিয়ার মো. রইচউদ্দিন মিঞা (বাবলু)। চলতি বছরের মার্চ মাসে দুই একর জায়গায় এই চিড়িয়াখানা করা হয়েছে।
মিনি চিড়িয়াখানায় বর্তমানে পিকনিক স্পট ছাড়াও ময়ূর, তিন পা ওয়ালা গরু, দুম্বা, বানর, অস্ট্রেলিয়ান ঘুঘু, চীনা হাঁস, ব্রাহামা মুরগি, বিদেশি বিড়াল, ইমু পাখি, বিদেশি ইঁদুর, মায়াবি চিত্রা হরিণ, ককটেল পাখি, বিদেশি কুকুর, বিড়াল, খরগোশ ও কচ্ছপসহ বিভিন্ন পশুপাখি রয়েছে।
এখানে যেতে চাইলে, দিনাজপুর-ফুলবাড়ী মহাসড়কের মাঝপথে আমবাড়ী হয়ে ৫ কিলোমিটার এবং পার্বতীপুর শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে হাবড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মরনাই (তাহেরপাড়া) এলাকায় রাস্তার পাশে আবু তাহের মিঞা এগ্রো ফার্ম। আর সেই ফার্মই মিনি চিড়িয়াখানা। প্রবেশ মূল্য ধরা হয়েছে ২০ টাকা।
দিনাজপুর থেকে আসা দর্শনার্থী মো. ফারুক মিয়া ও আকতারুল ইসলাম বলেন, মিনি চিড়িয়াখানায় প্রবেশের পর বিদেশি দুটি বিড়াল আমাদের পিছু নেয়। সারাক্ষণ সঙ্গে সঙ্গে ঘুরতে থাকে। মনে হয় এই চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখানোর গাইড সে। মিনি চিড়িয়াখানাটি অল্পদিনেই সবার দৃষ্টি কেড়েছে। ছুটির দিনে ভিড় বেশি হয়। একা কিংবা বন্ধুদের নিয়ে এখানে অনায়াসে বেড়াতে আসতে পারেন যে কেউ। এছাড়া চিড়িয়াখানার ভেতরেই রয়েছে পিকনিক স্পট। শিশুদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা আছে। শান্ত নিরিবিলি এই চিড়িয়াখানায় হাঁটার সময় চারপাশ থেকে পাখির ডাক শুনে ভালোই লাগবে।
এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক জহুরুল হক বলেন, মিনি চিড়িয়াখানাটি গড়ে ওঠার পর থেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা আসেন। ছুটির দিনে মানুষ আসেন বেশি। মাত্র ২০ টাকা টিকিটে যে কেউ প্রবেশ করতে পারেন। চিড়িয়াখানাটি আস্তে আস্তে পরিচিতি লাভ করছে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে যখন মালিক এই কাজ শুরু করেছিলেন তখন অনেকে ভেবেছিলেন এটা পাগলামি। এখন গ্রামটির কথা নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে। এভাবে এগিয়ে যেতে থাকলে এই এলাকার মানুষের অর্থনীতিতেও এর সুফল বয়ে আনবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এর প্রতিষ্ঠাতা মো. রইচউদ্দিন মিঞা (বাবলু) বলেন, আমি দুম্বা ও বিদেশি ছাগলের খামার করি। প্রায় আড়াই বছর খামার করেছি। এরপর শখের বশে বিনোদনের জন্য চলতি বছরই মিনি চিড়িয়াখানা গড়ে তুলি। মানুষের কাছে আকর্ষণ বাড়াতে সব ধরনের চেষ্টা করছি। আকর্ষণ বাড়াতে পিকনিক স্পট ছাড়াও উটপাখি, গাধাসহ নানা ধরনের পশুপাখি আনার চেষ্টা করছি। বিপন্ন ও বিরল প্রজাতির প্রাণীও রাখার ইচ্ছা আছে। প্রতিবেশীদের সহযোগিতা যেভাবে পাচ্ছি তাতে করে এর পরিধি আরও বাড়ানো সম্ভব হবে। শিশুদের জন্য বিভিন্ন খেলনাসহ এখানে রয়েছে সেলফি বুথ ও একটি ওভার ব্রিজ।
এমদাদুল হক মিলন/জেডএইচ/জিকেএস