সখীপুরে আ.লীগ প্রার্থীদের চেয়ে এগিয়ে বিদ্রোহীরা
পঞ্চম ধাপে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ওই ৬টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দিলেও বিদ্রোহীদের চাপে বিপাকে রয়েছেন মনোনীত প্রার্থীরা। উপজেলার হাতীবান্ধা বাদে ৫টি ইউনিয়নেই দলের হেভিওয়েট বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। আর এসব বিদ্রোহী প্রার্থীরা নিশ্চিন্তে তাদের নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ঘুরে জানা যায়, কাকড়াজান ইউনিয়নে উপজেলা আ.লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম বিদ্যুৎ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মনোনয়ন কিনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন সদ্য দলে যোগদানকারী দুলাল হোসেন। তার পাশে ছায়ার মতো রয়েছে ওই ইউনিয়নের চারবারের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক পান্না।
বহেড়াতৈল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছে ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সরকার। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গোলাম ফেরদৌস। শক্ত অবস্থান থেকে তিনি দ্বিধাহীনভাবে নির্বিচারে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীই শক্তিশালী বলে ভোটাররা জানান।
কালিয়া ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এসএম কামরুল হাসান দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, দুই বারের জেলা শ্রেষ্ঠ চেয়ারাম্যান ও উপজেলা আ.লীগের নব্য সদস্য বর্তমান চেয়ারম্যান জামাল মিয়া । তিনি নিরবিচ্ছিন্নভাবে এলাকার উন্নয়নে কাজ করায় এখানেও নৌকার ভরাডুবি হওয়ার আশঙ্কা করছেন দলীয় নেতৃবৃন্দ।
যাদবপুর ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের জোয়াহেরের ছোট ভাই ও উপজেলা আ.লীগের নব্য সদস্য এবং সাবেক চেয়ারম্যান একেএম আতিকুর রহমান আতোয়ার। এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী প্রচার ও প্রকাশনা লীগের ঢাকা উত্তর এর সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এস এ শাহীন। যিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার উন্নয়নে নানাবিদ কাজ করে যাচ্ছেন। একই ইউনিয়নে আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ খালেক।
বহুরিয়া ইউনিয়নে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কুতুব উদ্দিন আহমেদের ছেলে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন সদস্য গোলাম কিবরিয়া সেলিম। এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বিশিষ্ট চলচিত্র নির্মাতা শ্রী নিরঞ্জন সরকার। দীর্ঘদিন তার এলাকায় কোনো চেয়ারম্যান প্রার্থী না থাকায় দলমত নির্বিশেষে তার পক্ষেই কাজ করছে এ ইউনিয়নবাসী।
হাতীবান্দা ইউনিয়নে মনোনয়ন পেয়েছেন ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন। এ ইউনিয়নে কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলেও শক্ত অবস্থানে জয়ী হওয়ার ফুরফুরে মেজাজে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মো.আতোয়ার রহমান। তার অবস্থানও ভালো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা আওয়ামী লীগের উল্লেখযোগ্য কয়েকজন নেতা জানান, উপজেলা পর্যায়ে নেতৃবন্দের মধ্যে মত বিরোধ থাকার কারণেই প্রতিটি ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থীদের অবস্থা নড়বড়ে।
এ ব্যাপারে সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত সিকদার বলেন, বিদ্রোহীরা শেষ পর্যন্ত থাকবে না। প্রতিটি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীরাই জয়লাভ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আরিফ উর রহমান টগর/এসএস/এমএস