সমন্বয়ক দাবি করে চাঁদাবাজি, জাসদ ছাত্রলীগ নেতাকে গণধোলাই
সমন্বয়ক দাবি করে চাঁদাবাজিসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে জাসদ ছাত্রলীগ নেতা সোহেল রাজকে গণধোলাই দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজশাহী নগরীর কালেক্টরেট মাঠ এলাকায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে পিটিয়ে আহত করেন।
পরে পালিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। তবে সোহেলের অভিযোগ তাকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পিটিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্টের পর থেকে নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন সোহেল। এসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও নগরীর সমন্বয়কদের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেন। সে ছবি দেখিয়ে নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করতে থাকেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে একাধিকবার সর্তক করেন। তারপরও নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন সোহেল।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার তাকে শিক্ষার্থীরা সর্তক করলে তাদের সঙ্গে বিতর্কে জড়ান তিনি। এসময় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাকে পিটিয়ে জখম করেন। পরে সেখান থেকে পালিয়ে রামেক হাসপাতালে ভর্তি হন।
এ বিষয়ে রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. শঙ্কর কে বিশ্বাস বলেন, সোহেল নামে একজন ভর্তি হয়েছেন। তিনি নিজেকে সমন্বয়ক বলছিলেন। জরুরি বিভাগে ভর্তি আছেন। তবে তার গুরুতর কোনো ইনজুরি নেই। কয়েক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন আছে।
এদিকে পিটুনিতে আহত সোহেল রাজ জানান, তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিটিং থেকে বাসায় ফিরছিলেন। পথিমধ্যে রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে পিটিয়ে আহত করেছেন।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবীর হোসেন ও রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুল রহমান সৌরভ বলেন, সোহেল খুব ধূর্ত প্রকৃতির ছেলে। হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের পতনের পর আবির্ভাব হয়ে নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করে সরকারি দপ্তরগুলোতে চাঁদাবাজি শুরু করেন। অথচ তিনি জাসদ ছাত্রলীগের নেতা। তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য ছাত্র আন্দোলনের যারা আছেন তারাই তাকে পিটিয়েছেন। এখানে ছাত্রদলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
সোহেল রাজ জাসদ ছাত্রলীগের রাজশাহী মহানগরের সভাপতি ছিলেন বলে জানা গেছে। তবে তিনি নিজেকে ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহীর সমন্বয়ক দাবি করলেও অন্য সমন্বয়করা বলছেন, সোহেল নামের কোনো সমন্বয়ক নেই।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মিশকাত চৌধুরী মিশু বলেন, সোহেল নামের কোনো সমন্বয়ক রাজশাহীতে নেই। তবে রাজশাহী নগরীতে সমন্বয়ক দাবি করা একজনকে পেটানো হয়েছে বলে শুনেছি।
সাখাওয়াত হোসেন/জেডএইচ/এমএস