ওসির বাড়ির জন্য কালভার্ট নির্মাণ!
মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের ইটেরপুল থেকে পাথুরিয়ারপাড় সড়কের পাশে ছয়না গ্রামের ইটেরপুর খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে একটি কালভার্ট। তবে কালভার্টের আশপাশে নেই কোনো ঘনবসতি। অভিযোগ উঠেছে, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান মোল্লার বাড়িতে যাওয়ার জন্যই কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের ছয়না গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান মোল্লা। তিনি বর্তমানে ঢাকার উত্তরা জোনে হাইওয়ে পুলিশ পরিদর্শক পদে কর্মরত। এর আগে তিনি শরীয়তপুরের জাজিরা থানার ওসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শরীয়তপুরের জাজিরা থানায় ওসি থাকা অবস্থায় মন্ত্রণালয়ে বিশেষ তদবির করে নিজের বাড়ির জন্য কালভার্টটি পাস করিয়ে আনেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
মাদারীপুর শহরের ইটেরপুল থেকে পাথুরিয়ারপাড় সড়কের ওপর ছয়না গ্রামে নির্মাণ করা কালভার্টটির নাম দেওয়া হয় ‘কামাল মোল্লার বাড়ির নিকট কালভার্ট সেতু’। কামাল মোল্লা পুলিশ পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান মোল্লার ছোট ভাই। কালভার্টটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে তিন কোটি ২৩ লাখ ৮৭ হাজার ৯৬ টাকা। কাজটি বাস্তবায়ন করে আবরার এন্টারপ্রাইজ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, ওসি মোস্তাফিজুর রহমান মোল্লা ক্ষমতার অপব্যবহার করে কালভার্ট নির্মাণ করেছেন। সরকারের টাকা অপচয় করা হয়েছে। এর সঙ্গে যারা যারা জড়িত সবার বিচার হওয়া উচিত।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান মোল্লা বলেন, কালভার্ট নির্মাণের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। যৌথ পরিবার হওয়ায় বাড়িটি নির্মাণ করেছেন আমার বাবা আনু মোল্লা। বাবার বাড়ির সামনে কালভার্ট নির্মাণ করায় আমিও ক্ষুব্ধ।
তিনি আরও বলেন, অন্য কোথায়ও নির্মাণ না করে আমার বাবার বাড়ির সামনে কালভার্ট নির্মাণ করায় ঠিকাদারের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। ঠিকাদারও বিষয়টি এড়িয়ে যান। এলাকার মানুষ না জেনেই আমার ওপর মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন।
মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ওবাইদুর রহমান খান একটি হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় এলাকায় নেই। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, একটি বাড়ির জন্য একটি কালভার্ট নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ভালো বলতে পারবে।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসআর/জিকেএস