রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড
চেয়ারম্যান ও সচিবকে লাঞ্ছিত করায় দুই কর্মকর্তা সাময়িক বহিষ্কার
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে বাইরে থেকে লোক নিয়ে গিয়ে বোর্ড চেয়ারম্যান ও সবিচকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে চেয়ারম্যান ও সচিবের কক্ষে ২০-৩০ জন বহিরাগত লোক নিয়ে গিয়ে তাদের লাঞ্ছিত করা হয়।
অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা হলেন, সহকারী একাউন্টিং অফিসার অমিনুল করিম ও উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহিম। তারা আপন দুই ভাই। এই ঘটনার পর তাদেরকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া সোমবার রাতে নগরীর রাজপাড়া থানায় এজাহার দিয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সহকারী একাউনিং অফিসার অমিনুল করিম ও উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহিমের বিরুদ্ধে আনিত বেশ কিছু অভিযোগের ফাইনাল শুনানির নির্ধারিত দিন ছিল সোমবার। এদিন দুপুরে এইচএসসি পূনঃনিরিক্ষণের রেজাল্ট সংক্রান্ত গোপনীয় কাজ করছিলেন শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. অলীউল আলম। এ সময় হঠাৎ করে ২০-৩০ জন লোক চেয়ারম্যানের কক্ষে প্রবেশ করে তার ওপর চড়াও হয়। বোর্ডের ২০ কোটি টাকা বেসরকারি ব্যাংকে জমা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ এনে তারা চেয়ারম্যানকে জেরা শুরু করে।
বোর্ডের সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, কথা বার্তার একপর্যায়ে চেয়ারম্যান রুম থেকে বের হতে চাইলে তারা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। তিনি সচিবের কক্ষে গেলে তারা সেখানে দরজা বন্ধ করে দু’জনকে আটকে দেয়। পরে পুলিশ ও বোর্ডের কর্মকর্তারা মিলে তাদের উদ্ধার করেন। পাশাপাশি বহিরাগতদের বের করে দেন।
এ বিষয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সচিব প্রফেসর মো. হুমায়ূন কবীর বলেন, অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু আভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এগুলো নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি চলছিল। তখন তারা হঠাৎ করে বাহির থেকে লোক এনে জোর করে আমাকে ও চেয়রম্যানকে শারীরিকভাবে লঞ্ছিত করেন। তাদের দুজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. অলীউল আলম বলেন, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সহকারী একাউন্টিং অফিসার অমিনুল করিম ও উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহিম দুই ভাই। তাদের এক ভাইয়ের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি মামলা তদন্তাধীন আছে। সেই তদন্তে তিনি ভুয়া চিঠি দিয়ে থামানোর চেষ্টা করেছিলেন। পরে বাদী বলেছেন ও লিখিত দিয়েছেন তিনি এটি করেননি। তিনি এই অভিযোগ চালিয়ে যেতে চান। আরেক ভাইয়ের বিরুদ্ধে গোপন নথি বাহিরে পাচারের অভিযোগ প্রমানিত হয়েছে। এসব নিয়ে আজ (সোমবার) ফাইনাল শুনানির দিন ধার্য ছিল। তাদের অভিযোগ ধামাচাপা দিতেই তারা বাহিরাগতদের দিয়ে আমাদের অফিসে হামলা করে। আমার এটার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সহকারী একাউন্টিং অফিসার অমিনুল করিম ও উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহিমের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলে সেগুলো বন্ধ পাওয়া গেছে।
নগরীর রাজপাড়া খানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় সোমবার রাতে শিক্ষা বোর্ডের সচিব হুমায়ূন কবীর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। মামলায় বোর্ডের দুই কর্মকর্তা অমিনুল করিম ও জাহিদুর রহিমসহ ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সাখাওয়াত হোসেন/এফএ/জিকেএস