৩০ বছরের পরিত্যক্ত খাল সংস্কার করলো এলাকাবাসী
৩০ বছর ধরে আবর্জনা, কচুরিপানা আর ঝোপ জঙ্গলে পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছিল পটুয়াখালীর গলাচিপার চিকনিকান্দি ইউনিয়নের পানখালী খাল। খালটি পুনরুদ্ধারে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ধন্যা দিয়ে কোনো প্রতিকার মেলেনি। পরে এলাকাবাসী নিজেরাই চার লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে খালটি পুনরুদ্ধার করে। স্থানীয়দের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন।
এলাকাবাসী জানান, খালটি সংস্কার না করায় এর ওপর তৈরি হয়েছিল ঝোপ-জঙ্গল। যাতে বসবাস করতো শিয়াল, সাপসহ বিভিন্ন প্রাণী। প্রায়ই খাল পাড়ের মানুষের হাঁস-মুরগিসহ ছাগল ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটতো। খালে পানি প্রবাহ না থাকায় সৃষ্টি হতো জলাবদ্ধতা।
এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সময় সরকারের দপ্তরে যোগাযোগ করেও কোনো ফল পায়নি স্থানীয়রা। ফলে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্থানীয়রা চাঁদা তুলে ও মনিরুল ইসলাম নামে এক মালয়েশিয়া প্রবাসীর সহযোগিতায় খালটি পুনরুদ্ধার শুরু করে। গত এক মাসে এলাকাবাসীর কঠোর পরিশ্রমে খালের সাড়ে তিন কিলোমিটারে এখন স্বচ্ছ পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
সম্প্রতি খাল পুনরুদ্ধার শেষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হয়। যেখানে স্থানীয়রা প্রতিশ্রুতি দেন ভবিষ্যতে খাল দখল ও দূষণ মুক্ত রাখতে সচেতন থাকবেন।
সাবেক ইউপি সদস্য মহিউদ্দিন খান বলেন, আমি এই এলাকায় প্রায় ৪২ বছর নেতৃত্ব দিয়েছি। পানখালী এবং মাঝগ্রামের মধ্যদিয়ে প্রায় সাড়ে তিন-চার কিলোমিটার খাল পরিত্যক্ত ছিল। আমরা নিজেদের প্রচেষ্টায় খাল পরিস্কারের চিন্তা করি। কিন্তু আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় উদ্যোগ নিতে পারছিলাম না। এসময় আমাদের এলাকার প্রবাসী মনির হোসেন নিজ উদ্যোগে এগিয়ে আসেন এবং বড় ধরনের একটি অর্থ সহায়তা করেন। যে কারণে আমাদের কাজ সফল করতে পেরেছি।
একই এলাকার বাসিন্দা কালাম পহলান বলেন, আমার ৬৫ বছর বয়সের মধ্যে দীর্ঘ ৩৫ বছর যাবত দেখেছি খালটি অচল। কখনই পরিস্কার করা হয়নি। খালের এক প্রান্তে অসাধু চক্র বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করতো। তবে ৫ আগস্টের পর খালটি সচল করতে পেরেছি।
স্থানীয়দের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন জানান, ভবিষ্যতে যাতে খালে কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে প্রশাসন সহযোগীতা করবে।
আব্দুস সালাম আরিফ/জেডএইচ/জিকেএস