বরিশাল
উপমহাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ শ্মশানে দীপাবলি উদযাপন
বরিশালে প্রতিবছরের মতো এবারও উপমহাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ শ্মশান দীপাবলি উৎসব উদযাপিত হয়েছে। বুধবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত হাজারো মানুষ এই শ্মশান দীপাবলি উৎসবে অংশ নেন।
জানা যায়, প্রায় ২০০ বছরের প্রাচীন এই শ্মশান দীপাবলি উৎসবে আগতরা তাদের স্বজনদের সমাধিতে মোমবাতি, প্রদীপ, ধূপ কাঠি প্রজ্জ্বলন করেন এবং সমাধিতে প্রিয়জনের প্রিয় খাবার রেখে আসেন।
উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা জানান, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে প্রতিবছর কালীপূজার আগের দিন ভূত চতুর্দশী ও পূণ্য তিথিতে এই আয়োজন বরিশালে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান উৎসব বলে বিবেচিত।
নগরীর কাউনিয়ার মহাশ্মশানে স্বজনদের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসা স্মৃতি রানী বলেন, বাবার স্মৃতির উদ্দেশ্যে প্রতি বছর দীপাবলিতে তিনি মহাশ্মশানে যান। এ সময় তার পছন্দের সকল খাবার সমাধিতে রেখে আসেন।
সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকা থেকে আসা রুপক শীল জানান, ছোট বেলায় তার বাবাকে হারিয়েছেন। সেই থেকেই তার সমাধিতে ফুল দিতে আসেন। তাছাড়া এখানে আসলে পুরানো অনেক আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে দেখা হয়।
শ্মশান দীপাবলি উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয় ভক্ত বলেন, উৎসবকে ঘিরে প্রায় ৭ একর এলাকা জুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উৎসব সম্পন্ন করতে নারী পুরুষ মিলিয়ে ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবক রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি স্থানে সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বেওয়ারিশদের সমাধিগুলোকে কমিটির পক্ষ থেকে হলুদ রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর প্রিয়জনদের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে দীপাবলির সময় দেশ ও বিদেশ থেকে ১০-১৫ হাজার মানুষ এখানে আসেন। এখানে নতুন পুরোনো মিলিয়ে ৬০ হাজারেরও বেশি সমাধি রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হাজারের অধিক পাকা ও ১০ হাজার কাঁচা মঠ। তাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে জ্বালানো মোমের আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে পুরো শশ্মান।
শাওন খান/এফএ/এএসএম