ছেলের ‘অপরাধে’ মাকে লাঠিপেটা করলেন ইউপি সদস্য
নোয়াখালীর সূবর্ণচর উপজেলায় সালিশ বৈঠকে এক নারীকে আইউব আলী নামে এক ইউপি সদস্যের (মেম্বার) লাঠিপেটার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। শনিবার (২৬ অক্টোবর) এক মিনিট ৪৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে ওই নারীর স্বামীর দাবি, ‘তিনি বিএনপি করায় তার স্ত্রীকে এমন নির্যাতন করেছেন আওয়ামী লীগের ইউপি সদস্য।’
আইউব আলী সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এবং ওই ওয়ার্ডের শামসুল হকের ছেলে। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী ক্ষমতার দাপটে এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, জমিদখলসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে ভুক্তভোগী ওই নারী সাত সন্তানের মা। তার স্বামী কৃষিকাজ করে ও নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন।
ওই নারীর স্বামী জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনাটি আট মাস আগের। আমি চরজব্বর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছি। আওয়ামী লীগের মেম্বার আইউব আলী আমাকে ৮-৯টি মামলায় জড়িয়েছেন। ঘরে লুটপাট চালিয়েছেন। তাতেও ক্ষ্যান্ত না হয়ে আমার নিরপরাধ ছেলেকে চোর সব্যস্ত করে স্ত্রীকে প্রকাশ্যে নির্যাতন করে। এতোদিন কথা বলতে পারিনি, এখন আমি এর বিচার চাই।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়, বাড়ির উঠানে আশপাশে মানুষ জড়ো হয়ে আছে। মাঝখানে ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ছেলের অপরাধে মায়ের সম্পৃক্ততার কথা বলা হচ্ছে। একপর্যায়ে ওই নারীকে সবার সামনে উপর্যুপরি লাঠিপেটা করতে থাকেন ইউপি সদস্য আইউব আলী। এ সময় উপস্থিত অনেকে একজন নারীকে এভাবে না মারার অনুরোধ করলেও কথা শোনেননি ইউপি সদস্য। আবার অনেকেই ওই নারীকে দায়ী করে গালাগালি করতে থাকেন।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আইউব আলী ভিডিওর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ঘটনাটি আট মাস আগের। অভিযুক্ত পরিবারটি আমার আত্মীয় হয়। সমাজ রক্ষার স্বার্থে অপরাধী ছেলেকে আশ্রয় দেওয়ায় তার মাকে শাসন করেছি।
জনপ্রতিনিধি হয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিলেন কেন জানতে চাইলে দুইবারের এ ইউপি সদস্য বলেন, তখন বুঝতে পারিনি। আসলে বিষয়টি এভাবে করা আমার উচিত হয়নি। এখন বুঝতে পারছি এটা খুব অন্যায় হয়ে গেছে। তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সন্ত্রাস-চাঁদাবাজির অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি আমি দেখেছি। তবে এ বিষয়ে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইকবাল হোসেন মজনু/এফএ/এমএস