রাজশাহী
একদিনেই মিলছে মাদক পরীক্ষার প্রতিবেদন, তদন্তে আসছে গতি
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় অফিসে চালু হয়েছে রাসায়নিক পরীক্ষাগার। ১৭ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে এই ল্যাবে পরীক্ষা শুরু হয়। এতে করে একদিনের মধ্যেই মিলছে মাদক পরীক্ষার ফলাফল। আধুনিক এই পরীক্ষাগার চালুর ফলে একদিকে যেমন দ্রুত মামলার চার্জশিট হবে, ঠিক তেমনই কমবে খরচ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি রাজশাহী বিভাগের মামলাগুলোর তদন্তে গতি আনবে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় অফিসের তথ্যমতে, রাজশাহী বিভাগে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অধীনে জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৭৪১টি মাদক পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে জানুয়ারিতে ৮৪টি, ফেব্রুয়ারিতে ৯৬টি, মার্চ মাসে ৮৮টি, এপ্রিল মাসে ৯৭টি, মে মাসে ১০২টি, জুন মাসে ৯২টি, জুলাই মাসে ৭১টি, আগস্টে ৩৫টি ও সেপ্টেম্বর মাসে ৭৬টি মাদকের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
রাজশাহী বিভাগীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগারের পরীক্ষক আবু হাসান জানান, ৩০ জুন এই ল্যাবের প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। এর আগে ১৯ মার্চ ল্যাবটির গেজেট প্রকাশ পায়। এরপর নিয়োগ ও অন্যান্য কার্যক্রম শেষ করে ১৭ অক্টোবর এটি চালু করা হয়। বর্তমানে রাজশাহী বিভাগের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে সব পরীক্ষা এখানে করা হচ্ছে। ল্যাবটিতে মোট সাতজন কাজ করছেন। গত ছয়দিনে এখানে পরীক্ষা শেষে ১৪টি ফলাফল দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এটি একটি আধুনিক ল্যাব। সব সুযোগ-সুবিধা এখানে আছে। ল্যাবটির প্রতিদিনর সক্ষমতা প্রায় ৭০টি রিপোর্ট প্রস্তুত করার। এছাড়া যে কোনো ধরনের মাদক সর্বোচ্চ ২০ মিনিটের মধ্যেই পরীক্ষা করা সম্ভব। এগুলো ফলাফল দিতে এক থেকে সর্বোচ্চ তিনদিন সময় লাগছে। একদিনের মধ্যেই যে কোনো মাদকের পরীক্ষা করা সম্ভব।
রাজশাহী মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিচালক জিল্লুর রহমান বলেন, একটি মাদক মামলার প্রধান সাক্ষ্য হলো মাদকের পরীক্ষার প্রতিবেদন। আগে আমাদের এখানে কোনো মাদক মামলা বা মালামাল উদ্ধার হলে সেটি পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠাতে হতো। ফলে সময় লেগে যেত ২-৩ সপ্তাহ বা তারও বেশি। এটি এখন তিনদিনের মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। এটি একদিকে যেমন সময় কমাচ্ছে, মামলার তদন্তে গতি আনছে। পাশাপাশি সরকারের ব্যয়ও সংকোচন হচ্ছে।
জিল্লুর রহমান আরও বলেন, একটি মামলার তদন্ত দ্রুত হলে চার্জশিটও দ্রুত দেওয়া সম্ভব। ল্যাব হওয়ার কারণে এটিতে গতি এসেছে। ফলে এখন দ্রুত মাদক মামলা নিষ্পত্তি হবে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, পুলিশ তো সরাসরি মাদক উদ্ধার করে। কিন্তু মাদকের রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে বিলম্ব হওয়ায় চার্জশিট দিতে সময় লেগে যায়। এই রিপোর্টটা যদি দ্রুততম সময়ে পাওয়া যায় তবে দ্রুত তদন্ত শেষ হবে, দ্রুত চার্জশিট হবে এবং দ্রুত বিচার কাজও শুরু করা সম্ভব হবে।
রাজশাহী মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মাসুদ হোসেন বলেন, এটি শুধু আমাদের জন্য নয়। সবার জন্য ব্যবহার করা যাবে। ফলে রাজশাহীর মাদক মামলায় অনেক গতি আসবে।
তিনি বলেন, সব কার্যক্রম শেষে আমাদের ল্যাবটি এখন প্রস্তুত। এরই মধ্যে পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
সাখাওয়াত হোসেন/জেডএইচ/এএসএম