ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ছুটি না নিয়েই চার বছর ধরে অনুপস্থিত বেরোবি শিক্ষক

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | বেরোবি | প্রকাশিত: ০২:৫৬ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো রকম ছুটি ছাড়াই প্রায় চার বছর ধরে বিভাগে অনুপস্থিত থাকা এবং পিএইচডি করার অভিযোগ উঠেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রভাষক মাশরেকি মুস্তারির বিরুদ্ধে। তিনি কর্মস্থলে উপস্থিত না থেকেই প্রায় দুই বছর নিয়মিত বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা নিয়েছেন।

জানা যায়, ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে যোগদান করেন মাশরেকি মুস্তারি। ক্যাম্পাসে না এসেই ঢাকায় অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের লিয়াজোঁ অফিসে যোগদান করেন তিনি। যোগদানের পর লিয়াজোঁ অফিসে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের জন্য এক বছর ঢাকাতেই অবস্থান করেন। এরপর প্রশিক্ষণ শেষে ক্যাম্পাসে ফিরে ২০১৯ সালে শিক্ষার্থীদের মাত্র কয়েকটি ক্লাস নেন। ২০১৯ সালের পর থেকে বিভাগের কোনো কোর্স নেননি। এমনকি বিভাগেও উপস্থিত হননি।

তিনি কর্মস্থলে উপস্থিত না থেকেই প্রায় দুই বছর নিয়মিত বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা নিয়েছেন। এরপর ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে এই প্রভাষকের বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই তিনি বছরের পর বছর ধরে অবস্থান করছেন দেশের বাইরে। জাপানে পিএইচডি করলেও কোনো প্রকার শিক্ষাছুটির জন্য কখনো আবেদন করেননি তিনি।

এদিকে দীর্ঘদিন বিধিবহির্ভূতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার কারণ জানতে চেয়ে ওই শিক্ষককে নোটিশ দেয় প্রশাসন। পরে এর জবাবও দেন তিনি। নোটিশের জবাব যথাযথ না হওয়ায় একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের বিভাগে এমনিতেই শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষক কম। এর মধ্যে যদি কোনো শিক্ষক অনুপস্থিত থাকেন তাহলে আমাদের কোর্সগুলো শেষ করতে হিমশিম খেতে হয়।

এ বিষয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সাব্বীর আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বিভাগের তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান জুবায়ের ইবনে তাহের জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষাছুটি নেওয়ার ক্ষেত্রে মাসরেকি মুস্তারি লিখিত কোনো ডকুমেন্টস আমাকে দেননি। আমার পর আসাদ মন্ডল বিভাগীয় প্রধান হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। এরপর আমি জানি না কী হয়েছে।

এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি বিজন মোহন চাঁকী জাগো নিউজকে বলেন, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া দেশের বাহিরে থাকার সুযোগ নেই। ওনার তো চাকরি চলে যাওয়ার কথা। যদি চাকরি চলে না যায় তাহলে সামনে হয়তো এমন সিদ্ধান্ত আসবে, ওনার আর চাকরি থাকবে না।

ছুটি ছাড়াই চার বছরের বেশি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা কোনো ব্যক্তি শিক্ষকতা করার যোগ্য কি না এমন প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, যে সমস্ত শিক্ষক প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে ছুটি কাটাচ্ছেন বা বাইরে পিএইচডির জন্য গেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী জাগো নিউজকে বলেন, শহীদ আবু সাঈদের মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে কোন শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছেন আর কারা নিচ্ছেন না এবং একইসঙ্গে কোন কোন শিক্ষক পিএইচডি করতে গেছেন, তারা অনুমতি নিয়ে গেছেন কি না সমস্ত কিছুর তথ্য নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রারকে বলে রেখেছি। সামনের সিন্ডিকেট মিটিংয়ে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এফএ/এমএস