পরকীয়ার অপবাদে দুই ইউপি সদস্যকে নির্যাতন, যুবদল নেতা বহিষ্কার
রাজবাড়ীতে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে দুই ইউপি সদস্যকে বেঁধে মারধর ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে যুবদল নেতা রায়হান খানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান খানকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন সম্রাট ও সদস্য সচিব মামুনুল ইসলাম রনি স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাতে এ ঘটনা ঘটে এবং শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে ৫ জনকে অভিযুক্ত করে রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতিত ইউপি সদস্য উজ্জল সরকার।
ভিডিওতে দেখা যায়, কোনো একটি দোকান ঘরের মধ্যে রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য উজ্জল সরকার ও ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য হেলেনা বেগমকে কোমরে দড়ি বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করছেন বসন্তপুর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান খান। মারধরে হেলেনা বেগম চিৎকার করেন। এ সময় কয়েকজন অকথ্য ভাষায় দুই ইউপি সদস্যকে গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে তারা হেলেনা বেগমের গলা থেকে চেইন খুলে নেন। চেইন খোলার সময় ইউপি সদস্য হেলেনা বেগমকে বলতে শোন যায়, ‘এটি বিয়ের সময় আমার স্বামী আমাকে দিয়েছে।’
তাদের মারধর করতে পাশ থেকে আরও এক যুবককে লাঠি হাতে নিয়ে তেড়ে আসতে দেখা যায়। এ সময় ঘটনাস্থলে আরও বেশ কয়েকজনকে দেখা যায় এবং কয়েকজনকে মারধরের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, ঘটনার দিন দিবাগত রাতে ইউপি সদস্য উজ্জল সরকার ও হেলেনা বেগম স্থানীয় পূজা মণ্ডপে পূজা দেখেন। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে উজ্জল সরকার মোটরসাইকেলে হেলেনা বেগমকে বাজিতপুর গ্রামে হেলেনার স্বামীর বাড়িতে নামিয়ে দিতে যান। এসময় কয়েকজন ওই বাড়িতে গিয়ে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে দুই ইউপি সদস্যকে ধরে নিয়ে আসেন। পরে তাদের মহারাজপুর ব্রিজ এলাকার একটি দোকান ঘরে আটকে দড়ি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করেন। হেলেনা বেগম বর্তমানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) শরীফ আল রাজীব বলেন, এ বিষয়ে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
রুবেলুর রহমান/এফএ/জেআইএম