নিয়োগে অনিয়ম
সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের দুই নারী কর্মকর্তা বরখাস্ত
অনিয়ম ও জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগের সত্যতা পাওয়ায় বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (বিওআরআই) দুই নারী কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বুধবার (২ অক্টোবর) ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. তৌহিদা রশীদ স্বাক্ষরিত আদেশে তাদের বরখাস্ত করা হয়।
বরখাস্ত দুই নারী কর্মকর্তারা হলেন, সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সীমা রানী ও মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. ফাতেমা রহমান।
বিওআরআই (বোরি) মহাপরিচালক ড. তৌহিদা রশীদ জানান, অনিয়ম-দুর্নীতি ও জাল-জালিয়াতির মধ্যমে ফাতেমা রহমান ও সীমা রানী বোরিতে চাকরি পেয়েছিলেন। সরকারি নিরীক্ষা প্রতিবেদনে অনিয়ম ধরা পড়ায় দুজনকে চাকরি থেকে অবসান (বরখাস্ত) করা হয়েছে। চাকরিকালীন তারা যে বেতন তুলেছেন সেটি সরকারি কোষাগারে ফেরত আনা হবে। এছাড়াও দুজনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
চাকরিকালীন সীমা রানী বেতন ও বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের বিপরীতে তুলেছেন ১৭ লাখ ৪ হাজার টাকা। ফাতেমা রহমান বেতন তুলেন ১০ লাখ ২৩ হাজার ৫০৭ টাকা। তবে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে বরখাস্ত হওয়া সীমা রানী ও ফাতেমা রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের রামুর খুনিয়াপালং পাহাড়ে ২০১৫ সালে নির্মাণ করা হয় দেশের প্রথম সমুদ্রবিদ্যা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট। ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানে জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ সময় মেডিকেল কর্মকর্তা, সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসারসহ বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। বরখাস্ত হওয়া দুজন নিয়োগ পান ২০২২ সালের ২৯ আগস্ট।
ইনস্টিটিউট সূত্র জানায়, ডাক, টেলিযোগাযোগ, বিজ্ঞান, তথ্য এবং প্রযুক্তি অডিট অধিদপ্তর কর্তৃক ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বার্ষিক কার্যক্রমের নিরীক্ষা করা হয়। ওই সময় জালিয়াতি ধরা পড়ে। গত বছরের ২ নভেম্বর অডিট অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. রফিকুল ইসলামের দেওয়া অডিট প্রতিবেদনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্তানুযায়ী আবেদন না করা সত্ত্বেও অনিয়ম-দুর্নীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে মেডিকেল অফিসার পদে চিকিৎসক ফাতেমা রহমান এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার পদে সীমা রানীকে নিয়োগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
২০১৯ সালে সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার পদে আবেদন করেন সীমা রানী। এ পদে আবেদনের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়েছিল ডক্টরেট ডিগ্রি অথবা স্নাতকসহ (সম্মান) স্নাতকোত্তর। অথচ সীমা রানীর কোনোটাই ছিল না। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০২ সালে ডিগ্রি (পাস কোর্স) সম্পন্ন করেন।
২ অক্টোবর ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. তৌহিদা রশীদের ইস্যু করা আদেশের নোটিশে বলা হয়, চাকরির আবেদন না করেও ফাতেমা রহমান সরকারি চাকরি পেয়েছিলেন। নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহলকে বিশেষ ম্যানেজ করে সরকারি চাকরি হাতিয়ে নেন ওই চিকিৎসক। আর সীমা রাণীও রহস্যজনক কারণে যথাযথ সনদ না থেকেও চাকরি হাতিয়ে নিয়ে দিব্যি দায়িত্বপালন সরকারি অর্থ উত্তোলন করেন।
সায়ীদ আলমগীর/আরএইচ/এএসএম