পানি কমায় তিস্তার ১৬ পয়েন্টে ভাঙন
পানি কমতে শুরু করায় তিস্তা নদীর লালমনিরহাট অংশের ১৬ পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন হাজারো মানুষ। গত তিনদিনে অন্তত ৬০ ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে রয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
বুধবার (২ অক্টোবর) সকাল থেকে তিস্তার ভাঙন কমে গেছে। পরিবারগুলো ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। অনেক পরিবারের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হওয়ায় পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের বাহাদুরপাড়া, গরিবুল্লাপাড়া, সদরের খুনিয়াগাছ, রাজপুর, তাজপুর, হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউওয়া বাড়ির চর ডাউওয়া বাড়ি, সিন্দুর্না ও গড্ডিমারী এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গত দুদিনে এসব এলাকায় ৬০টির বেশি বাড়িঘর ভেঙে গেছে এ ছাড়া এসব পয়েন্টে কমপক্ষে ৫০০ পরিবার ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে। ভাঙনে শত শত হেক্টর ফসলি জমি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ নানান স্থাপনা হুমকির মুখে রয়েছে।
আদিতমারী উপজেলার বাহাদুর পাড়ার বৃদ্ধ আমিনুল বলেন, ‘এবারসহ ১৬ বার বাড়ি ভাঙল। ভাঙতে ভাঙতে আমাদের অবস্থা খারাপ। হামরা এখন কই যাই। কোনোমতে জীবনটা নিয়ে বেঁচে আছি।’
আদিতমারী উপজেলার খুনিয়াগাছে আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘আমরা ত্রাণ চাই না। নতুন সরকারের প্রতি অনুরোধ দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে তিস্তা পাড়ের মানুষকে রক্ষা করুন।’
হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, চার দফায় বন্যায় ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের প্রায় ২০০ পরিবারের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। অনেক পরিবার সরকারি জমিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জিয়াউল হক জিয়া বলেন, অত্র ইউনিয়নের বন্যার্তদের জন্য টাকা ও ৫ টন জিআর চাল বরাদ্দ পেয়েছি, সেটি বিতরণ করা হয়েছে।
লালমনিরহাট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। বরাদ্দের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। জরুরি বরাদ্দ পেলেই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি স্পটে ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, বন্যাকবলিত মানুষের মধ্যে ১৩ লাখ টাকা ও ৯০ টন জিআর চাল বিতরণ শুরু হয়েছে। ভাঙন রোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।
রবিউল হাসান/আরএইচ/এমএমএআর/জিকেএস