শিক্ষাক্ষেত্রে নারীদের প্রতিবন্ধকতা উত্তরণের উপায়বিষয়ক সভা

কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় ‘শিক্ষাক্ষেত্রে মেয়েদের প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক আলোচনা সভা হয়েছে। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মালালা ফান্ডের অর্থায়নে ও জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট পরিচালিত ‘অদম্য’ (অপারেটিং ডাইভারসিফাইড অপরচুনিটিস ইন ম্যাস-মিটিগেশন অব অবস্ট্যাকলস অব গার্লস এডুকেশন) প্রকল্পের আওতায় এ সভা করা হয়।

‘অদম্য’ প্রকল্পের আওতায়, বিদ্যালয়ে মেয়েশিশুদের ভর্তিবৃদ্ধি, নারীশিক্ষা ও জেন্ডারভিত্তিক বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে কমিউনিটিভিত্তিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও গার্লস ক্লাব গঠন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের এসটিইএম, এসইএল ও দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষার দেওয়ার মাধ্যমে সহায়তা করা হচ্ছে। এছাড়া, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও এসএমসি সদস্যদের জেন্ডারবান্ধব শিক্ষার পরিবেশ ও মনিটরিংয়ের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কর্মশালা ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ, যৌন হয়রানি ও জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, স্যানিটারি ন্যাপকিন দেওয়া ও মাসিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সভার মূল আলোচনায় মেয়েদের শিক্ষায় প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায় নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়। এছাড়া প্রকল্পের লক্ষ্য ও কার্যক্রম সম্পর্কেও বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হয়।

জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মামুন অর রশিদ বলেন, সমাজে প্রকৃত পরিবর্তন আনতে শিক্ষার প্রসার ও নারীদের অধিকারকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। যদিও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, এরপরও নারী ও শিশুদের কল্যাণসহ নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমাদের অঙ্গীকারবদ্ধ থাকতে হবে। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর নারীদের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ ও সেবা নিশ্চিত করতে এবং সঠিক সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছে।

‘আমাদের স্থানীয় কমিউনিটিগুলোর সঙ্গে আরও বেশি সম্পৃক্ত হতে হবে ও নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। সঠিক প্রচারের মাধ্যমে আমরা সহিংসতা কমাতে ও সবার জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে পারবো।’

জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান করভি রাকসান্দ বলেন, জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট বিশ্বাস করে যে শিক্ষা পৃথিবী পরিবর্তনের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার। মালালা ফান্ডের ‘অদম্য’ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা মেয়েশিশুদের শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করছি। আমাদের লক্ষ্য এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে প্রতিটি মেয়ে তার স্বপ্ন অনুসরণ করতে পারবে ও সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে।

জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের এডুকেশন চ্যাম্পিয়ন কামরুল কিবরিয়া অয়ন বলেন, মিঠামইনের মতো প্রত্যান্ত অঞ্চলে, যেখানে উন্নত মানের শিক্ষার সুযোগ খুবই সীমিত, সেখানে অদম্য প্রকল্পটি মেয়েদের শিক্ষাসহায়ক নীতির পক্ষে প্রচার, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার পরিবেশ তৈরির পাশাপাশি নারীশিক্ষার গুরুত্ব বাড়ানোর জন্য একটি শক্তিশালী অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে।

এই প্রকল্পের একজন উপকারভোগী তাসমিয়া মিম বলেন, গার্লস ক্লাবের সদস্য হয়ে আমি আত্মবিশ্বাসী ও সচেতন হতে পেরেছি। এখন আমি আমার স্কুলের অন্য মেয়েদের মাঝেও সচেতনতা ছড়াতে সাহায্য করছি। গার্লস ক্লাবের কার্যক্রম আমাকে অনেক দক্ষ করে তুলেছে, যা আমার চারপাশের মানুষের জন্যও উপকারী।

এসকে রাসেল/এসএএইচ